তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহালে হাত দিলে হাত পুড়ে যাবে : তোফায়েল

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের বিষয়ে কেউ যদি হাত দেন, তাহলে তাঁর হাত পুড়ে যাবে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

আজ রোববার সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগকে ইঙ্গিত করে এ কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কবর রচনা হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা থাকতে সুপ্রিম কোর্ট তো নয়ই, আর অন্য কোনো মাধ্যম থেকেও এ ব্যবস্থা পুনর্বহালের কোনো সুযোগ নেই।

এ সময় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, রায়ের পর্যবেক্ষণের বিষয়ে সরকার ডিফেন্সিভও নয়, নমনীয়ও নয়।

প্রধান বিচারপতিকে আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব-উল-আলম হানিফের ধন্যবাদ বিষয়ে জানতে চাইলে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘সরকার নমনীয় নয়। তবে প্রধান বিচারপতি বাস্তবতা বুঝতে পেরেছেন। এ জন্য তিনি মিসকোট (ভুল ব্যাখ্যা) না করতে বলেছেন। এ কারণে মাহবুব-উল-আলম হানিফ তাঁকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। এর অর্থ এই নয় যে আমরা নমনীয়। আমরা এখন ক্ষমতায় আছি। আওয়ামী লীগ দেশের অনেক পুরোনো একটি রাজনৈতিক দল। আমাদের দলটি পোড়খাওয়া দল।’

এ রায় দেশের মানুষ মেনে নেয়নি বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

রায়ের পর্যবেক্ষণটি বারবার পড়েন জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, “আজকেও পড়েছি। প্রধান বিচারপতি রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ‘নির্বাহী বিভাগ শেষ, আইন বিভাগ শেষ, বিচার বিভাগও ডুবু ডুবু। সংসদীয় গণতন্ত্র অপরিপক্ব। হ্যাঁ, সংসদ প্রশ্নবিদ্ধ।’ আমি প্রশ্ন রাখতে চাই, তার মানে কী দেশ অকার্যকর?”

এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের দুটি বক্তব্যের সমালোচনা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল বলেছেন যে লজ্জা থাকলে সরকার পদত্যাগ করবে। আর মওদুদ আহমদ বলেছেন, এ রায়ের আলোকে সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। আমি বলতে চাই, আমাদের লজ্জা আছে। বিএনপির লজ্জা নাই। এই মওদুদ আহমদই বিচারপতিদের বয়স বৃদ্ধি করে বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। আইনের শাসনের পরিপন্থী অনেক আইন করেছেন।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম রায় না পড়েই রায়ের বিষয়ে কথা বলছেন বলেও অভিযোগ করেন তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়েও রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে যে উনার একক নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, ১ তারিখের পর থেকে এই রায় নিয়েই আলোচনা হচ্ছে। ১০ তারিখ পর্যন্ত দেশের কোনো মিডিয়াতেই আমাদের বক্তব্য আসেনি। একতরফাভাবে বিএনপি এবং রায়ের পর্যবেক্ষণের পক্ষেই লেখালেখি ও সংবাদ ছাপা হয়েছে। সবার কাছেই মনে হয়েছিল যে সরকারের বিরুদ্ধে একটা মোক্ষম কিছু পেয়ে গেছেন।’