তিস্তা ব্যারেজের জমি দখল হয়ে যাচ্ছে

দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে। নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় থাকা এই জমি অবৈধভাবে দখল করে ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের চাপানি বাজারে ২ শতাধিক পাকা-টিনের দোকান ঘর ও গুদাম ঘর নির্মাণ করছে প্রভাবশালীরা।

অভিযোগ উঠেছে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজস্ব শাখার কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী এর নেপথ্যে জড়িত থেকে অবৈধ জমি দখলকারীদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপনি ইউনিয়নের ছোটখাতা, ডালিয়া, নতুন বাজার, বাঘের পুল, নাউতরা ইউনিয়নের তুহিন বাজার, ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের চাপানির হাটসহ আশেপাশে এলাকায় সহস্রাধিক দোকান ঘর তৈরি করা হচ্ছে।

একদিকে সরকারি সম্পতি অন্যদিকে তিস্তার সেচ ক্যানেলের ধারে যে যেভাবে পারছে বসতভিটাসহ দোকানঘর তৈরি করছে।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, তিস্তা ব্যারেজে যাওয়ার প্রধান সড়কের ডিমলা উপজেলার ডালিয়ার চাপানী বাজারে সেচ ক্যানেল ও সড়কের ধারে তিস্তা ব্যারেজের আওয়তায় ১০ একর সরকারি জমি রয়েছে। যা দেখা শোনার করে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজস্ব শাখা।

উক্ত স্থানে রাস্তা সংলগ্ন জমিগুলো অবৈধভাবে দখল করে ওই জমিতে মানিক হোসেন ৮টি ঘর, সিদ্দিকুর রহমান গোডাউন ঘরসহ চারটি, আছিমুদ্দিন ৮টি দোকান ঘর, জহুরুল ইসলাম ৪টি, আব্দুল লতিফ ৩টি, জাহাঙ্গীর আলম ১টি, ফরিদুল ইসলাম ১টি, আইয়ুব আলী ১টি, মহুবর রহমান ১টি, মোজাম হোসেন ৫টিসহ প্রায় দুই শতাধিক দোকার ঘর তৈরি করা হয়েছে এবং হচ্ছে। এসব দোকান ও গুদাম ঘর নির্মাণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে টিন ও ইট দিয়ে। এ ছাড়া আশে পাশের জমি যারা অবৈধভাবে দখল করে ঘিরে রেখেছে তারা জমির পজিশন বিক্রি করছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজস্ব শাখার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রতিটি পাকা দোকান ঘর বাবদ ৪০ হাজার ও আধাপাকা দোকান ঘর হতে ৩০ হাজার করে টাকা নিচ্ছে।

এসময় জানা যায় অবৈধ দখলকারীদের মতো অপর এক ব্যবসায়ী সফিয়ার রহমান জমি দখল করে ইট দিয়ে পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করছে। তাকে ডেকে নিয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজস্ব কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম ৪০ হাজার টাকা বুঝিয়ে নিয়ে দ্রুত দোকান ঘর নির্মাণের জন্য অনুমতি দেয়।

ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, চাপানি বাজারে রংপুর ডালিয়া প্রধান সড়কে পাউবোর জমিতে শত শত পাকা আধাপাকা দোকান ঘর তৈরি করা ফলে রাস্তাটি চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপোযোগী হয়েছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুঘটনা।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজস্ব কর্মকর্তা জহিরুল ইসলামের বলেন, এটা নিয়ে রির্পোট করার প্রয়োজন নেই। আমরা অবৈধ জমি দখলকারীদের তালিকা তৈরি করছি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও উচ্ছেদ করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবৈধ দখলকারীদের কাছ হতে কোনো টাকা নেয়া হয়নি। এটি মিথ্যাভাবে তারা প্রচার করছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজার রহমান বলেন, পাউবোর জমি দখল করে দোকান ঘর তৈরি করার বিষয়ে জবর দখলকারীদের তালিকা তৈরি করে প্রশাসনের মাধ্যমে উচ্ছেদ করা হবে। কবে তালিকা করা হবে সে বিষয়ে কিছুই বলতে পারেন নি তিনি।