তুরস্কের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান ও উপ-রাষ্ট্রদূত কেমাল বুরাকের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন বিএনপি শীর্ষ নেতারা।

রবিবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরানের সাথে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়েছে।

পরে বৈঠক শেষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন সম্পর্কে বিএনপির বক্তব্য তুরস্কের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।

এছাড়া রোহিঙ্গা ও মানবাধিকার ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এর আগে বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান এ বৈঠক হওয়ার কথা জানান।

শায়রুল কবির বলেন, বেলা ১১টার দিকে বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠকে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান, উপ-রাষ্ট্রদূত কেমাল বুরাক, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ অংশ নেন।

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে তুরস্কের রাষ্ট্রদূতের সাথে বিএনপি মতবিনিময় করেছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

আমীর খসরু সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন নিয়ে আমাদের মধ্যে আলাপ হয়েছে, রোহিঙ্গার ব্যাপারে আলাপ হয়েছে। আপনারা জানেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার্কির ইনিশিয়েটিভ অত্যন্ত দূরদৃষ্টি সম্পন্ন। প্রথমেই তার্কির ফার্স্ট লেডি মন্ত্রীদের নিয়ে এখানে এসেছিলেন। বিশ্বের সামনে তাদের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গার বিষয়টি খুব বড়ভাবে তুলে ধরা হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘মূলত দুই দেশের সম্পর্ককে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেগুলো সবসময় আলোচনায় উঠে আসে আমাদের বাংলাদেশের নির্বাচন, মানবাধিকার, আইনের শাসন ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।’

তুরস্ক কি বলে গেছে জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ‘কী বলেছে সেটা তো বলা যাবে না। কারণ এটা তো আমাদের…।’

নির্বাচন নিয়ে কি আলোচনা হয়েছে প্রশ্নের জবাবে খসরু বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে সবাই বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে জানতে চাচ্ছে আসলে যে, এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কী সেটা জানতে চেয়েছে। বিএনপির অবস্থান আমরা তুলে ধরেছি। বিএনপির পক্ষে আমরা পাবলিকলি যা বলেছি সেটাই সেখানে তুলে ধরেছি। এখানে লুকোচুরির কিছু নাই। আমরা সব সময় যা বলি.. সেটাই বলা হয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থা সম্পর্কে আলাদা করে বলার কিছু নাই। এটা সবাই জানে, এগুলো বলতে হয় না।’

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সময়ে তুরস্কের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সস্পর্ক গড়ে ওঠা এবং ঢাকায় কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ এবং আঙ্কারায় জিয়াউর রহমান সড়কের নামকরণসহ দুই দেশের নিবিড় সম্পর্কের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন, আমীর খসরু।

এর আগে রবিবার বেলা ১১টায় গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তফা ওসমান তুরানের পতাকাবাহী গাড়ি প্রবেশ করে।

এই রুদ্ধদার বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ।

রাষ্ট্রদূতের সাথে ছিলেন তুরস্কের উপ-রাষ্ট্রদূত কামাল বুরাক তেমিজেল।

গত ১৭ মার্চ গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলের সাথে বৈঠক করেন জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার।