তুরস্ক থেকে দেশের পথে বাংলাদেশি উদ্ধারকারী দল

শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন শহরে ১০ দিনের সফল উদ্ধার অভিযান শেষ করে দেশের পথে রওনা হয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নেতৃত্বাধীন সমন্বিত উদ্ধারকারী দল। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় মধ্যরাতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিশেষ বিমানে দেশের পথে রওনা হন তারা। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সময় বিকেল নাগাদ দেশে এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তাদের।

প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে তুরস্কে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকায় নিজেদের সর্বোচ্চ দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ১০ দিনের সফল উদ্ধার অভিযান শেষে দেশে ফেরার অপেক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নেতৃত্বাধীন সমন্বিত উদ্ধারকারী দল।

গেল ১৫ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরে যাওয়ার কথা থাকলেও তুরস্ক সরকারের অনুরোধে বাড়ানো হয় উদ্ধার অভিযানের মেয়াদ। সোমবার মধ্যরাতে আদানা বিমানবন্দর থেকে বিমান বাহিনীর বিশেষ বিমানে করে বাংলাদেশের পথে রওনা হন তারা।

স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পরপরই তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের তত্ত্ববধানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা উদ্ধারকর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত ও মৃতদের উদ্ধারে কাজ শুরু করে বাংলাদেশি উদ্ধারকারী দল। কাজ করতে গিয়ে স্থানীয়দের শ্রদ্ধা, সম্মান আর ভালোবাসা পেয়েছেন দলের প্রতিটি সদস্য।

তুরস্কের প্রশাসনিক পর্যায়েও বাংলাদেশের উদ্ধারকারী দলের কার্যক্রম ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।

সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোরের ২৪, মেডিকেল দলের ১০ ও ফায়ার ব্রিগেডের ১২ জনের সমন্বয়ে গঠিত উদ্ধারকারী দল ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ১৪ জন ক্রু গেল ৯ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে পৌঁছায়।

উল্লেখ্য, তুরস্কে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ উদ্ধারকারী দল কর্তৃক উদ্ধারের সংখ্যা ২৪। এদের মধ্যে জীবিত উদ্ধার হয়েছেন একজন। বাকি ২৩ জনই মৃত।

এর আগে, গত রোববার (১৯ ফেব্রয়ারি) প্রায় দুই সপ্তাহ পর বেশিরভাগ প্রদেশে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছিল তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি)। সেদিন সন্ধ্যা নাগাদ অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে তুরস্ক।

গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ৪৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। তবে এই প্রাণহানির সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্মরণকালের ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে কেবল তুরস্কেই ৩ লাখ ৪৫ হাজারের মতো অ্যাপার্টমেন্ট ধ্বংস হয়েছে। এখনও অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া ১০ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পরেছে। ভুমিকম্পের কারণে কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা দেশ দুটির।