‘টাকার জন্য ৯০০ লাশ দাফনের কথা প্রচার করেছে মিল্টন’

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের কর্ণধার মিল্টন সমাদ্দার ৯০০ লাশ দাফনের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। বরং উল্টো তিনি গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে স্বীকার করেছেন মানুষের সহানুভূতি এবং টাকা পাওয়ার জন্যই লাশের সংখ্যা বাড়িয়ে বলে ভিডিও তৈরি করে ফেসবুকে দিতেন তিনি। এমনকি নিজ মুখে স্বীকার করা ১৩৫টি লাশ কোথায় দাফন করা হয়েছে সে বিষয়েও কোনো তথ্য দিতে পারেননি মিল্টন সমাদ্দার।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, ৯০০ লাশ দাফন করা হয়েছে এমন ভিডিও মিল্টন মানুষের সহানুভূতি ও টাকার জন্য করেছে। আমরা তার কাছে ৯০০ লাশ কোথায় কবর দেওয়া হয়েছে সেটি জানতে চেয়েছি। পরে সে নিজের মুখে ১৩৫টি লাশ দাফনের কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু সেসব লাশের ব্যাপারেও কোনো ধরনের প্রমাণপত্র দেখাতে পারেনি। এগুলো আমরা আরও তদন্ত করব। অনাথ-অসহায় মানুষের এসব ভিডিও ফেসবুকে দিয়ে সে মানুষের বিবেকে নাড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আর মানুষজনও তাকে বিশ্বাস করে বিকাশ-নগদের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এই আশ্রমে কোনো ডাক্তার সে রাখেনি। উল্টো সে নিজেই বিভিন্ন অপারেশন করতো। তখন মানুষজন আর্তনাদ করলে সে পৈশাচিক আনন্দ ভোগ করতো। সবকিছুই আমরা বের করেছি। আমাদের আরও কিছু তথ্য জানার বাকি আছে। প্রয়োজনে তাকে আবারও রিমান্ডে আনব।

ডিবিপ্রধান বলেন, সমাজে এ ধরনের কাজ আরও যারা করছেন তাদের ব্যাপারেও আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। আমরা দেখেছি মানুষের কাছ থেকেই কোটি কোটি টাকা এনে নিজের অ্যাকাউন্টে রেখে দিয়েছে। কারা তাকে সহযোগিতা করেছে সেসব বিষয়েও আমরা বের করব।

তার (মিল্টন সমাদ্দার) স্ত্রীর কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে কি না জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, প্রয়োজন বোধে তার স্ত্রীকে আবারও আমরা জিজ্ঞাসার জন্য ডাকব।

তবে বর্তমানে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের দায়িত্ব একটি ফাউন্ডেশন সম্পূর্ণরূপে বহন করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এর আগে, আজ দুপুরে মানবপাচার আইনের মামলায় চারদিনের রিমান্ড শেষে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করা হয়। সেসময় তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছেন ডিবি পুলিশ।