দুই ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে তপসিল ঘোষণার পথে হাঁটছে নির্বাচন কমিশন

নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হলে একরকম আর না হলে অন্যরকম প্রস্তুতি নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)! দুই ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে তপসিল ঘোষণার পথে হাঁটছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। নির্বাচনের প্রস্তুতির লক্ষ্যে নির্বাচনি উপকরণ সংগ্রহের কার্যক্রম প্রায় শেষের পথে।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবন থেকে জেলা পর্যায়ে এসব উপকরণ পাঠাবে ইসি। ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোতে ব্যালট বক্স পাঠানোর মধ্যে দিয়ে এ প্রক্রিয়ার শুরু হচ্ছে। এছাড়া মাঠ কার্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে রাজনৈতিক সমঝোতা নেই, এই অবস্থায় ভোটের জন্য পরিবেশের অনুকূল কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা সবার দায়িত্ব। আমাদের যেমন দায়িত্ব আছে, রাজনৈতিক দলগুলোরও দায়িত্ব আরও বেশি। রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেটা আছে সেটা সমঝোতা হতেও পারে। আবার নাও হতে পারে। তখন পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। তবে আমরা নিঃশঙ্ক চিত্তে থাকতে চাই যে রাজনৈতিক সমঝোতা হবে। এটা দেশ ও জাতির জন্য ভালো।

সমঝোতা না হলে ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে কীভাবে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী হবে তা কেউ বলতে পারছি না।

যেটাই হোক, আমাদের একার কিছু করার থাকবে না। রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোটারদের নিরাপত্তার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। সমঝোতা হলে একরকম হবে, না হলে পরিস্থিতি আরেকরকম হবে। এখনই আমরা আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হবে, এটাই আশা করি আমরা। পরিস্থিতি ভালো না হলে সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণায় অনড় বিএনপিসহ সমমনা বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী দলীয় সরকারের অধীনে ভোটের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। এরই মধ্যে যথাসময়ে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে পিছিয়ে নেই ইসি। চিন্তিত নয় নির্বাচনি পরিবেশ নিয়েও।

সাংবিধানিকভাবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। সেক্ষেত্রে ১ নভেম্বর শুরু হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা। ২ নভেম্বর আসনভিত্তিক চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে ইসি। আগামী ৫ নভেম্বর দুটি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন সম্পন্নের পরপরই তপসিল ঘোষণা করা হবে।

তপসিল ঘোষণার অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবন জেলাপর্যায়ে ব্যালট বক্স পাঠানো শুরু হচ্ছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ইত্তেফাককে বলেন, আমরা আশা করছি বৃহস্পতিবার ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার ঢাকার সব জেলার নির্বাচন অফিসে ব্যালট বক্স পাঠাতে পারব। ঢাকার জেলা অফিসগুলোতে মোট ১২ হাজার ব্যালট বক্স যাবে।

ইসির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এরপর পর্যায়ক্রমে দূরের জেলাগুলোতে নির্বাচনি মালামাল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৩ ধরনের নির্বাচনি উপকরণ কিনতে হয়। অধিকাংশ কেনাকাটা শেষ। অনেক মালামাল পেয়েও গেছি। তপসিলের আগেই সব মালামাল আমরা পৌঁছে দেব।