দেশে চলছে ভয়াবহ দু:শাসন, আতঙ্কিত মানুষ ফিসফিস করে কথা বলে: রিজভী

দেশে ভয়াবহ দু:শাসন চলছে। মানুষ আতঙ্কিত হয়ে এখন ফিসফিস করে কথা বলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, মানুষ চলতে গেলে ডান তাকাচ্ছেন, বাঁ দিকে তাচ্ছেন। পেছনে তাকিয়ে তাকিয়ে চলতে হচ্ছে তাদের। তারা সব সময় চিন্তা করে মুখ ফসকে যদি কোনো কথা সরকারের বিরুদ্ধে বেরিয়ে যায়, সেটা কেউ শুনলো কি না, জানলো কি না, এ ভয়ে সব সময় আতঙ্কিত থাকতে হয়। গোয়েন্দরা তাকে অনুসরণ করছে কি না, তার ছায়া সঙ্গী হচ্ছে কি না এ ধরনের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় থাকে মানুষ। ফলে এখন ফিস ফিস করে কথা বলছেন তারা।

তিনি আরও বলে, আমরা যখন লিফলেট বিতরণ করতে যাই অনেকেই আমাদের সঙ্গে হাত মেলায় চোখের ভাষায়। বোঝা যায় তাদের সম্মতি আছে আমাদের কর্মসূচিতে। তবে তারা আতঙ্কে আছেন। এমনও হয়েছে প্রাইভেট চাকরি করা একজন লিফলেট হাতে নিয়ে বলেছেন, এটা প্রকাশ্যে পড়া যাবে না বাসায় নিয়ে পড়বো।

সরকারের সীমাহীন নিপীড়ন নির্যাতনের কারণে দেশে দুঃশাসন এতটাই তীব্র হয়েছে যে স্বাভাবিকভাবে জীবন-যাপন করা যাচ্ছে না দাবি করে বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, যারা সত্য কথা বলবে তাদের নামে হবে নাশকতা সহ ভয়ঙ্কর সব মামলা। এই দেশে যখন উপনিবেশ শাসন ছিল তখনও রাজনীতিবিদদের নামে মামলা দেয়া হতো কিন্তু তখন তাদের সম্মান করতো, এটা কারাগারে হোক বা কারাগারের বাইরে হোক। বর্তমানের মতো এত নিষ্ঠুর অবিচার নির্যাতন অসম্মান করা হতো না। আওয়ামী লীগের এই নির্যাতন নিপীড়ন অতীতের স্বৈরাশাসকের সব রেকর্ড এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও ছাড়িয়ে গেছে।

‘‘এদেশে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম হয়েছে, আন্দোলন হয়েছে। স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধেও আন্দোলন হয়েছে সেই আন্দোলনে আমিও আহত হয়েছি আমার পেটে গুলি লেগেছিল। সেই গণতন্ত্রের আন্দোলনের চিহ্ন এখন আমি বয়ে বেড়াচ্ছি। এখনো কেন এই দেশে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করতে হবে? এখনো কেন মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য কথা বলতে হচ্ছে?’’ প্রশ্ন রিজভীর।

বিএনপির নেতাকর্মী ও সমমাননা দলের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, আমরা যে লিফলেট বিতরণ করছি আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো এই লিফলেট প্রতি ঘরে ঘরে নিয়ে যাবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সবার হাতে হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবেন। কারণ, এই কর্মসূচির প্রতি জনগণের সমর্থন রয়েছে।

রিজভীর অভিযোগ, কারাগারের ভেতরেও বিএনপির সিনিয়র নেতাকর্মীরা নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সাবেক সংসদ সদস্যরা কারাগারে ডিভিশন পান কিন্তু সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের ডিভিশন বাতিল করে সাধারণ কয়েদিদের জায়গায় রাখা হয়েছে।