নওগাঁর আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত

উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ভারী বৃষ্টির কারণে নওগাঁয় গত ২৪ ঘণ্টায় আত্রাই নদীর জোতবাজার পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে উপজেলার প্রান্তিক কৃষকরা চাষাবাদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেও ফের বন্যার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

শনিবার (২ জুলাই) এ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মিঠুন কুমার ভূষণ।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোল রুম থেকে শনিবার দুপুর ১২টায় জানা যায়, আত্রাই নদীর জোতবাজার পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। আত্রাই নদীর রেলস্টেশন পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার, মহাদেবপুর পয়েন্টে ৪০ সেন্টিমিটার, শিমুলতলী পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আত্রাই নদীর পানি কখনও কমছে, কখনও বাড়ছে। পানির এই হ্রাস-বৃদ্ধিতে নদীর অরক্ষিত তীরে ভাঙনের আশঙ্কাও রয়েছে। এ ছাড়াও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের মানুষের মধ্যে বন্যার আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়েছে। নতুন ফসল লাগানোর প্রস্তুতি নিলেও তারা এখন আতঙ্কে রয়েছে। তবে প্রতিদিনই নদীগুলোতে যে পরিমাণ পানি বাড়ছে, তাতে জেলার কিছু নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এ ব্যাপারে নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মিঠুন কুমার ভূষণ জানান, টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে কয়েক দিন ধরেই আত্রাই নদীর পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আত্রাই নদীর জোতবাজার পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। এ ছাড়াও আত্রাই নদীর রেলওয়ে স্টেশন পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার, শিমুলতলী পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার, মহাদেবপুর পয়েন্টে ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী কয়েক দিন যদি বৃষ্টির পানি বাড়ে তাহলে সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে বেশি সময় লাগবে না। প্রচÐ বৃষ্টি উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, নওগাঁর আত্রাই নদীর তিনটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধগুলো পরিদর্শন করছি। চেষ্টা করছি দ্রæত কিভাবে মেরামত করা যায়। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী দুই-তিন দিন পানি আরও কিছুটা কমবে বলে জানান তিনি।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, নওগাঁর সদর, মান্দা, আত্রাই, রানীনগর, পোরশা ও সাপাহার, ধামইরহাট উপজেলার ৫০টি গ্রামের ৬০ হাজার মানুষ নদীর তীরে বসবাস করছে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে নদীর ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধগুলো মেরামত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।