নির্বাচনী প্রচারে আজ মাঠে নামছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা

আজ সিলেটে হজরত শাহজালাল ও হজরত শাহপরানের মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে নির্বাচনী সফর শুরু করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।এরপর সিলেটের আলিয়া মাদরাসা মাঠে নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেবেন।সেই জনসভা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার শুরু করবেন।

সারা দেশে গত সোমবার থেকে আনন্দ-উল্লাসে ভোটের প্রচার শুরু করেছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা। নিজ নিজ এলাকায় জনসংযোগ করছেন তাঁরা। প্রচারণার পোস্টারে ছেয়ে গেছে নির্বাচনী এলাকা। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলছেন প্রার্থীদের প্রতিনিধিরা।

গতকাল মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে বিজয় শোভাযাত্রা। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রের পাশাপাশি সারা দেশে শোভাযাত্রা করে আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন সভায় অংশ নিয়ে সংক্ষিপ্ত বত্তৃদ্ধতা দিয়েছেন প্রার্থীরা।ভোটারদের কাছে ভোট চেয়েছেন। ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে বাদ্য বাজিয়ে এলাকাভিত্তিক মিছিল হয়েছে।

গতকাল ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের গেট থেকে আওয়ামী লীগের শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে ধানমণ্ডি ৩২-এর বঙ্গবন্ধু ভবনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় হাজারো নেতাকর্মী শোভাযাত্রায় অংশ নেন। তাঁরা ট্রাক, পিকআপসহ হেঁটে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে যান।

দেশের বেশ কিছু জায়গায় নির্বাচনী প্রচারের সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ওপর হামলার খবর পাওয়া গেছে। অনেক জায়গায় নির্বাচনী প্রচারে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিছু জায়গায় সংঘর্ষও হয়েছে। নির্বাচনী প্রচার ও আওয়ামী লীগের শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে ঢাকার প্রধান সড়কে যানজট তৈরি হয়।

ঢাকা-১৯ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মোহাম্মদ তৌহিদ জং মুরাদের নির্বাচনী প্রচারে প্রায় ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়েছে যাত্রীরা। গতকাল সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিপিএটিসি বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে বলিয়ারপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়।

ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদ সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিজয় শোভাযাত্রা করেন। সমাবেশে যাওয়ার পথে ফেরদৌস আহমেদ কলাবাগান, হাতিরপুল ও নিউ মার্কেট এলাকার ভোটারদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় তিনি স্থানীয় ভোটারদের কাছে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।

ঢাকা-১১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ ওয়াকিল উদ্দিন বিজয় শোভাযাত্রায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। ঢাকা-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সাভারের হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে নির্বাচনী জনসভার মধ্য দিয়ে প্রচারণা শুরু করেন।

জনসভায় কামরুল ইসলাম বলেন, ‘যারা নির্বাচনে আসবে না, তারা রাজনীতির মাঠ থেকে চিরতরে হারিয়ে যাবে।’ সাভারের তিনটি ইউনিয়ন ভাকুর্তা, আমিনবাজার ও তেঁতুলঝোড়ার ভোটারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচনী জনসভা।

ঢাকা-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সালমান এফ রহমান সকাল থেকেই নবাবগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামে লিফলেট বিতরণ করেন।

নির্বাচনী প্রচারে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘বিএনপি যখন নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র শুরু করে, তখন আমি অনেক বিদেশির সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করেছি। তাদের দাবি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। আমি বিদেশিদের বলেছি, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে, তবে শান্তিপূর্ণ হবে কি না, তার নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। কারণ বিএনপি যেসব কর্মকাণ্ড করছে, তাতে দেশের শান্তি নষ্ট হচ্ছে।’

নির্বাচনে ঢাকা-৪ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা গতকাল তাঁর নির্বাচনী এলাকায় দ্বিতীয় দিনের মতো প্রচার চালান। এদিন শ্যামপুরের ৪৭ নম্বর এবং কদমতলী থানার ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন তিনি।

বাবলা বলেন, ‘জাতীয় পার্টি সব সময় দেশের কল্যাণে কাজ করেছে। আমাদের প্রতিটি নেতাকর্মী শান্তিপ্রিয়। আমরা সহিংসতায় বিশ্বাস করি না। জনগণ যদি তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে লাঙল মার্কা বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।’

ঢাকা-১১ আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনোনীত প্রার্থী মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ডাব প্রতীকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন।