পচনশীল পণ্য সংরক্ষণে গুদাম নির্মাণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পেঁয়াজ সংরক্ষণে গুদাম নির্মাণ করতে হবে। এসময় পেঁয়াজের পাশাপাশি পচনশীল সব পণ্য সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণের নির্দেশ দেন তিনি।

মঙ্গলবার (০৬ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভায় ১৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এসময় পরিকল্পনা বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

একনেক সভায় অনুমোদিত ১৮টি প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৭ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে ৩ হাজার ৮৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ও সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৮০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা পাওয়া যাবে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দুঃসময়েও চমৎকার বাজেট উপহার দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে আমরা ধন্যবাদ জানিয়েছি। বাজেটে মূল্যস্ফীতি ও বিদ্যুৎকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এই মুহূর্তে বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়াটা গ্রহণযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বৈদেশিক ঋণের চাপ কমাতে জিটুজি ঋণের ব্যবহার বাড়াতে হবে। আমাদের জায়গা থেকে এসব অর্থ ব্যয়ে জোর দিতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। এছাড়া, অনাবাদি জমি চাষ বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‌‘ফরিদপুর জেলাধীন মধুমতি নদীর বাম তীরের ভাঙন থেকে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি যাদুঘর সংযোগ রাস্তাসহ অন্যান্য এলাকা সংরক্ষণ ও ড্রেজিং’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘বাগেরহাট জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প; কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘নতুন ৬টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং বিদ্যমান গবেষণাগার উন্নয়ন’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘নেত্রকোণা জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প; প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘আশ্রয়ণ-২ (৫ম সংশোধন)’ প্রকল্প।

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ‘১০টি মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ১৯টি হোস্টেল ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প; স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের ‘পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন, পটুয়াখালী (১ম সংশোধনী)’ প্রকল্প; মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন আর্টস ফ্যাকাল্টি বিল্ডিং স্থাপন’ ও ‘হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (এইচইএটি)’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ‘বাগেরহাট কালেক্টরেটের নতুন ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প; নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট-১: শেওলা, রামগড় ও ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর উন্নয়ন এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।

এছাড়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাস সড়ককে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিংক রোড নির্মাণ (প্রস্তাবিত ১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; ‘সাভার সেনানিবাস এলাকায় মিট প্রসেসিং প্ল্যান্ট স্থাপন’ প্রকল্প; ‘ডিজিএফআইয়ের টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি অবকাঠামো, মানবসম্পদ এবং কারিগরি সক্ষমতা উন্নয়ন (টিআইএইচডিটিসিবি) (প্রস্তাবিত ২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প; রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েল গেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ (প্রস্তাবিত ২য় সংশোধনী)’ প্রকল্প এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প (২য় সংশোধিত) প্রকল্পের মেয়াদ ৪র্থ বার বৃদ্ধি’ প্রকল্প।

পরিকল্পনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান; কৃষি মন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক; তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহ্‌মুদ; স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম; শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি; শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীগণ সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।

সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজি’র মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সিনিয়র সচিব ও সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।