পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ভুল চিকিৎসায় গরুর মৃত্যু

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ভুল চিকিৎসায় কৃষক পরিবারের একটি গরুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে কথিত প্রাথমিক পল্লী পশুচিকিৎসকের বিরুদ্ধে।

সোমবার (২২ আগস্ট) সকালে উপজেলার ৫নং বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের কালদাসপাড়া গ্রামের মৃত করিমুলের ছেলে তরিকুল ইসলামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। হাতুড়ে ওই পশুচিকিৎসকের নাম রুবেল হোসেন। তিনি একই ইউনিয়নের বুড়াবুড়ি গ্রামের মৃত জহিরুল ইসলামের ছেলে।

এনিয়ে মৃত গরুটির মালিক তরিকুল ইসলাম বলেন, তিনি রোববার (২১ আগস্ট) রাতে কথিত ওই পশুচিকিৎসকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। পরে কথিত ওই পশুচিকিৎসক গরুর আঁচিল রোগ ভালো হওয়ার জন্য ৫টি ইনজেকশন পুশ করেন। গরুটি সুস্থ্য না হয়ে রোগের পরিস্থিতি বেশি হওয়ায় পরের দিন সকালে গরুটি মারা যায়। ভুল চিকিৎসায় গরুটি মারা গিয়েছে কিনা, তরিকুল ওই কথিত পশু চিকিৎসকসহ স্থানীয় ইউপি সদস্য, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও স্থানীয় অন্যান্য প্রাথমিক পল্লী পশু চিকিৎসকদের ডেকে নিয়ে আসেন।

জানাযায়, ইউপি সদস্যা ফাতেমা বেগমের স্বামী মুকুল হোসেন, স্থানীয় অন্যান্য প্রাথমিক পশু চিকিৎসকদের মধ্যে দেলোয়ার, মোয়াজ্জেম, হারুন অর রশিদ, হারুনের কম্পাউন্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী, সাবেক ইউপি সচিব সেরাজুল হক, তহিদুল ইসলাম প্রমূখের উপস্থিতিতে সালিশী বৈঠকের মাধ্যমে কথিত ওই পশুচিকিৎসক রুবেল তার ভুল স্বীকারোক্তিতে ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে চেয়েছেন।

এদিকে কথিত প্রাথমিক পল্লী পশুচিকিৎসক রুবেল হোসেন ভুল চিকিৎসার কথা অস্বীকার করে বলেন, তিনি এলার্জিসহ ৫টি ইনজেকশন পুশ করেছেন। তিনি আরোও বলেন, আঁচিলের জন্য যে চিকিৎসা দিতে হয়, তিনি সেই চিকিৎসায় দিয়েছেন। সঠিক চিকিৎসা দেয়া হইলে গরুটি মারা গেল কেন? প্রশ্নোত্তরে বলেন, ভাই (সাংবাদিক) মৃত্যু বলে আসেনা। তাহলে উপস্থিত অন্যান্য প্রাথমিক পল্লী পশু চিকিৎসকগণ বলছেন এটি ভুল চিকিৎসা হওয়ার কারণে মারা গেছেন, এতে আপনি কি বলবেন? তিনি বলেন, আপনি তো ভাই বুঝেন কেউ কারো ভালো দেখতে চাইনা।

স্থানীয় প্রাথমিক পল্লী পশু চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা নামের সামনে ডাক্তার কথা লিখতে পারবেন না। তাদেরই মধ্যে কতিপয় প্রাথমিক পল্লী পশু চিকিৎসকগণ তাদের ভিজিটিং কার্ডে ‘প্রাণী চিকিৎসক’, ‘ডাক্তার অমুক’ কথার লেখা ব্যবহার করে মূল ধারার প্রাথমিক পল্লী পশু চিকিৎসকদের বিভ্রান্তি করছেন জানিয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কথিত ওই প্রাথমিক পল্লী পশুচিকিৎসক রুবেল হোসেন স্বেচ্ছায় মানুষের বাসায় গিয়ে পশু চিকিৎসার কথা বলেন এবং মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে চিকিৎসা দেন। শুধু তাই নয়, তিনি তার ভিজিটিং কার্ডে ‘প্রাণি চিকিৎসক’ কথা ব্যবহার করে আসছেন এবং মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে দেয়ালে কিংবা বাঁশের খুঁটিতে কিংবা বারান্দার সড়ে প্রাণি চিকিৎসক রুবেল হোসেন ও তার নাম্বার লিখে দিয়ে বেড়াচ্ছেন। এছাড়া ওই গ্রামে তার চিকিৎসায় ছাগল মারা যাওয়ার কথাও উঠেছে জানতে পারা যায়।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্যা ফাতেমা বেগমের স্বামী মুকুল হোসেন বলেন, তিনি সালিশী বৈঠকটি করেন এবং ওই চিকিৎসককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তিনি বলেন, টাকা পরিশোধের জন্য কয়েকদিন সময় চেয়ে নিয়েছেন। সেই টাকা না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।