পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রযুক্তির ব্যবহারে কৃষিতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে চাষিরা

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় করোনা মহামারি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্নতা অর্জনে সচল রয়েছে কৃষিকাজ। কৃষাণ কৃষাণিদের নিরলস পরিশ্রম, প্রযুক্তির ব্যবহারে চাষাবাদ এবং মাঠ পর্যায়ে সঠিক পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষিতে অভাবনীয় সাফল্য এনেছে কৃষি বিভাগ। এছাড়া চাষিদের কৃষিতে আগ্রহী করে তুলতে সরকারী প্রনোদনাসহ বিনামূল্যে সার ও বীজ প্রদান, কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে বলে দাবী স্থানীয় কৃষি বিভাগের ।

এছাড়া ক্ষতিকর পোকা নিধনে কীট নাশকের ব্যবহার, মিষ্টি পানি সংরক্ষনে ¯øুইজ গেট নিয়ন্ত্রন ও পুকুর খনন, উৎপাদিত কৃষি পন্য সংরক্ষন, বাজারজাত করন এবং রাষ্ট্রায়াত্ত¡ ও বেসরকারী ব্যাংক থেকে কৃষি ঋন বিতরনে প্রতিবন্ধকতা দূরীকরনে কৃষিতে এমন সফলতা পেয়েছে কৃষক, এমনটাই দাবি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের।

দুর্যোগ প্রবন সমুদ্র তীরবর্তী বাংলাদেশের সর্বদক্ষিনের জনপদ কলাপাড়া উপজেলায় সম্প্রতি ঘূর্নিঝড় ’ইয়াস’ সৃষ্ট অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি অরক্ষিত বেড়িবাঁধের ভেতর প্রবেশ করে সামান্য ক্ষতি করলেও তেমন প্রভাব পড়েনি। আর এর নেপথ্যে রয়েছে রোদে পোড়া, বৃষ্টিতে ভেজা কৃষি পেশায় নিয়োজিত সেই মানুষ গুলোর ঘাম ঝড়ানো পরিশ্রম।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, গত ক’বছরে ধান, গম, আখ, আলু, মিষ্টি আলু, ডাল জাতীয় ফসল মুগ, মসুর, খেসারী, ফেলন, সরিষা, চিনা বাদাম, মসলা জাতীয় ফসল মরিচ, পিয়াজ, রসুন, হলুদ, ধনিয়া এবং অন্যান্য ফসল তরমুজ, বাংগি, খিরাই, শসা, পেঁপে ও শীতকালীন শাক-সবজি চাষে কৃষকের সফলতা ও স্বাবলম্বী হওয়ার গল্প প্রভাব ফেলেছে স্থানীয় বেকার যুবদের মাঝে। সনাতন পদ্ধতির গরু মহিষের হাল চাষ হ্রাস পেয়ে চাষাবাদে যুক্ত হয়েছে প্রযুক্তিগত ট্রাক্টর, হারভেষ্টর সহ নানাবিধ বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি। গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠছে কৃষি ফার্ম। এতে বেকারত্ব হ্রাস পেয়ে বাড়ছে কৃষি উৎপাদন এবং সচল হচ্ছে অর্থনীতির চাকা।

কলাপাড়া কৃষি অফিস সুত্র জানায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে বোরো হাইব্রীড জাতের ধান , উফশী জাতের, উফশী জাতের আউশ ধান, স্থানীয় জাতের ধান, উফশী জাতের আমন , স্থানীয় জাতের আমন ধান, গম, ভুট্রা, আখ, আলু, মিষ্টি, আলু,ডাল জাতীয় ফসল মুগ , মসুর, খেসারী, ফেলনসহ বিভিন্ন ফসল লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে।

উপজেলার ধানখালী গ্রামের কৃষক কালাম গাজী (৩৬) বলেন, গরু-মহিষের হাল চাষ’র বদলে কৃষিকাজে এখন ব্যবহৃত হচ্ছে ট্রাক্টর, রাইস ট্রান্স প্লান্টার, কম্বাইন হার ভেষ্টার এবং রাইস এন্ড হুইট রিপার।এতে করে কৃষকের সময় এবং উৎপাদন খরচ অনেকটাই কমে গেছে। ফলে কৃষিতে নতুন সম্ভবনা দেখছেন চাষিরা। চম্পাপুর গ্রামের কৃষক বিজয় সরকার (৪৫) বলেন, কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষন, উঠান বৈঠক ও মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের পরামর্শ পেয়ে এখন অনেকেই প্রযুক্তির ব্যবহারে চাষাবাদের দিকে ঝুঁকছে। ’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মন্নান জানান, কৃষিতে সাফল্য অর্জনে কৃষি বিভাগ সর্বদা মাঠ পর্যায়ে কৃষকের পাশে থেকে সঠিক পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কারনে এলাকায় কৃষি ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে।