পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বাঁশবাড়ি ঝিলের সৌন্দার্যে বিমোহিত পর্যটকরা

কোন ধরনের ইট পাথর কিংবা লোহা সাদৃশ্য বস্তু নয়। শুধুমাত্র বাঁশ,গোলপাতা আর ছন দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে অবকাঠামো। পর্যটদের হৃদয়ে প্রাকৃতিক অনুভূতি ছুঁয়ে দিতে হরেক রকম রং আর ফুল গাছ দিয়ে সাজিয়ে দেয়া হয়েছে চারপাশ। আর দৃষ্টিনন্দন এই অবকাঠামোর আলোকসজ্জা দুর থেকে নজর কাড়তে বাধ্য করবে প্রকৃতি প্রেমীদের।

যা ইতোমধ্যেই সাড়া ফেলেছে কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসা পর্যটকসহ স্থানীয়দের মাঝে। তাই আগন্তুকরা বলছেন, মন জুড়ানো বাঁশবাড়ি ঝিল নির্মাণের মধ্যদিয়ে বাংলার ঐতিহ্যবাহী আদিম সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়েছে।

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়ক লাগোয়া পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রবেশ পথে শেখ হাসিনা ফোরলেন সড়কে ঢুকতেই পর্যটকদের চোখ আটকে দিচ্ছে বাঁশবাড়ি ঝিল। পানির উপরে এই বাড়ি নির্মাণের শুরু থেকেই কৌতূহল ছিল মানুষের মনে। যা শুক্রবার উদ্বোধনের পরেই নতুন এক বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে সব বয়সীদের মাঝে। মূলত এটি সুস্বাদু কফি এবং মুখরোচক খাবার বিক্রির প্রতিষ্ঠান হলেও বাঁশবাড়ি পর্যটকদের কাছে মাত্র এক দিনেই বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

কুয়াকাটায় যাত্রা পথে প্রায় সবধরণের যানবাহন থামিয়ে এক নজর দেখতে উৎসুক মানুষ এখন ভিড় করছেন এই বাড়িতে। আর সিংহভাগ পর্যটকরা এখানে প্রবেশ করেই ক্যামেরা বন্দি করে নিচ্ছেন নিজেকে। বরিশাল থেকে বেড়াতে আশা পর্যটক সরকারী কর্মকর্তা গোলাম কাদের বলেন, সপ্তাহিক ছুটিতে পরিবার নিয়ে কুয়াকাটায় যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে এখানে চোখ আটকে গেল। তাই পরিবারের সবাই নেমে এখানে ঢুকেছি। তবে এখানে প্রবেশ করেই আমার সন্তানেরা মনোমুগ্ধকর পরিবেশে উল্লাসে মেতেছে। এমনকি আমি নিজেও মুগ্ধ হয়েছি এখানের সাজসজ্জা দেখে।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক বিথি জানান, কুয়াকাটায় ভ্রমণ শেষে পায়রাবন্দর দেখবো বলে ফোরলেন দিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু নিচে পানি এবং বাশেঁর অবকাঠামো দেখে বিমোহিত হয়েছি। তিনি বলেন, বরিশালের কোথাও এমন দৃষ্টিনন্দন যায়গা আমার চোখে পড়েনি।

বাঁশবাড়ী ক্যাফে ঝিল

বাঁশবাড়ি ক্যাফে ঝিলের পরিচালক সৈয়দ মশিউর রহমান শিমু জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তার স্বপ্ন ছিল বাংলার ঐতিহ্য ধরে রেখে কংক্রিট ছাড়াই এমন একটা কিছু নির্মাণ করার। সেই চিন্তাধারা থেকেই প্রায় ৭ হাজার বাঁশ,কাঠ, গোলপাতা এবং ছন দিয়ে এই বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। এটি নির্মাণে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে তাকে। আর এই কাজে তার স্ত্রী আর্থিক সহযোগীতা করেছেন।

এটি উদ্বোধনের পর থেকেই পর্যটকদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে মেহমানদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার কথা জানান তিনি। কলাপাড়া থানার ওসি মো.জসীম জানান, শেখ হাসিনা ফোরলেন সড়ক সংলগ্ন এলাকায় নতুন বাঁশবাড়ি ক্যাফেতে অনেক পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। আমাদের পুলিশ প্রশাসন তাদের নিরাপত্তায় সবসময়ই সচেষ্ট আছে।