নওগাঁর পত্নীতলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জেএমবি নেতা আটক

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলা থেকে দশ বছর আত্মগোপনে থাকা জেএমবির শীর্ষ নেতা সানোয়ার হোসনে ওরফে আ. রউফকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সানোয়ারকে শনিবার ১৬ এপ্রিল রাত ৯টায় পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ) গ্রেফতার করে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের হোমিও ডাক্তার সানোয়ার ওরফে রউফ ২০০০ সালে জেএমবির সদস্যভুক্ত হন। এরপর থেকে নাচোল ও গোমস্তাপুরে জেএমবির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন তিনি। ২০০৭ সালে জেএমবির আমীর শায়খ আব্দুর রহমানের ফাঁসি হলে কিছুদিন মাওলানা সাইদুর রহমান জেএমবির আমীর হন।পরবর্তীতে নেতৃত্ব নিয়ে জেএমবির মধ্যে অন্তর্কোন্দল শুরু হয়। তারই জেরে ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল সানোয়ার ও তার কয়েক জন সহযোগী প্রতিপক্ষ গ্রুপের জেএমবি সদস্য স্বঘোষিত আমীর সালমানকে হত্যা করে। তারা কৌশলে সালমানকে নাচোল উপজেলার খুলশী বোরিয়া এলাকার একটি আমবাগানে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে সালমানকে হত্যা করে তারা।ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার কিছুদিন পর সানোয়ার জামিনে মুক্ত হন। সালমান হত্যা মামলায় ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত পলাতক সানোয়ারসহ তিনজনের মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন। সালমান হত্যা মামলা ছাড়াও সানোয়ারের বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬ (২)/৮/৯/১০/১২/১৩ ধারায় ও দ-বিধির ৩০২/২০১/৩৪ ধরায় দুটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে। এছাড়া গোমস্তাপুর থানায় দ-বিধি-১৮৬০ এর ৩৪১/৩৯৯/৩৩২ ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।রোববার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁ পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া ও অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আকিউল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকিউল ইসলাম এসব তথ্য জানান।তিনি আরও বলেন, সালমান হত্যা মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে সানোয়ার চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ এলাকায় জেএমবিকে সক্রিয় করার কাজ করে যাচ্ছিলেন। সম্প্রতি এটিইউ’র চৌকস আভিযানিক দল জানতে পারে যে, সানোয়ার নাম পরিবর্তন করে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ছোট চাঁদপুর এলাকায় আব্দুল্লাহ নামে আত্মগোপন করে আছেন। সেখানে তিনি ভেড়া পালন ও রাজমিস্ত্রী হিসেবে কাজ করছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।