পাবনার আটঘরিয়া পৌর নির্বাচনে নৌকার মাঝি হতে চান বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক

পাবনা আটঘরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী হতে চান বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহুরুল হক।

আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই সভা-সমাবেশ, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সেবামূলক কর্মকাÐের মাধ্যমে আটঘরিয়াবাসীকে পৌর নির্বাচনে মেয়র পদ প্রার্থীরা তাদের প্রার্থীতার বিষয়টি জানান দিচ্ছেন।

এদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহরুল হক। তিনি পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার ও আওয়ামী পরিবারের সন্তান। স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছন। এছাড়াও তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের একজন অন্যতম সদস্য ও প্রবীণ রাজনীতিবীদ। মুজিববাহিনী আঞ্চলিক কমান্ডার ও আটঘরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

কৃষ্টিয়াপাড়া গ্রামের মরহুম সৈয়দ আবু সাঈদ এর ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা জহরুল হক। তিনি ঐতিহাসিক ৭ মার্চ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছেন। ১৯৭১ সালে এপ্রিল মাসে ২য় সপ্তাহে গমন করে কেচুয়াডাঙ্গা উইয়থ ক্যাম্পে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে পরে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য দেরাদুন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

তিনি ঐ সময়ে বঙ্গবন্ধুর পুত্র শেখ কামালের সাথে সাক্ষাৎ করেন। ৪১ দিন প্রশিক্ষণের পর ব্যাকপুর ক্যান্টনমেন্ট কলকাতা পশ্চিম আঞ্চলিক নেতা তোফায়েল আহমেদের নিকট হতে অস্ত্র নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। দেশে এসে ২২ অক্টোবর আটঘরিয়ায় যুকদেরকে সংঘঠিত করে বেরুয়ার গ্রামে পাক বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধ করেন। এই যুদ্ধে ২জন সহযোদ্ধা শহীদ হন। ৬ নভেম্বর বংশীপাড়া কালামনগর পাকহানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রণ করেন। এসময় এইযুদ্ধে ১০জন সহযোদ্ধা শহীদ হন। গফুরাবাদ, উত্তরচক, আটঘরিয়া থানাসহ বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে ২৮ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিকট ঢাকা স্টেডিয়ামে অস্ত্র জমা দেন তিনি।

আরও জানাগেছে, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগষ্ট সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও স্ব-পরিবারের সকল সদস্যদেরকে হত্যা করার পর ঘাতক জিয়াউর রহমানের সেনাবাহিনী তাকে আর্মি ক্যাম্পে ধরে নিয়ে ৭ দিন ৭ রাত ঝুলিয়ে রাখেন। বৈদ্যুতিক শর্ট দিয়ে তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে অমানুষিক নিযার্তন চালায়। শারীরিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে যাওয়ার পরেও দুই মাস কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়। দুই মাস কারাগারে থাকার পর পাবনা কারাগার থেকে মুক্তি পায়।

নিজের উপজেলায় সবসময় সেবামূলক কার্যক্রমে পরিচালনা করেন মনোনয়ন প্রত্যাশী এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীন নেতা। তিনি এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত বলেও জানা গেছে। এছাড়াও তিনি করোনাকালীন সময়ে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যসামগ্রী, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও নগদ অর্থ বিতরণ করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আশরাফ, সুলতান মাহমুদ, আব্দুস সাত্তার, আব্দুল বাতেন মুন্সি, আবুল হোসেন, আহসান আলী, আবুল কাশেম মুন্সিসহ সকলেই জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহুরুল হক দলীয় মনোনয়ন পেলে জয়ের ব্যপারে শতভাগ আশাবাদী।

বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক বলেন, ‘আমি আমার পৌরসভাকে নিয়ে যেতে চাই আধুনিকতার উচ্চ শিখরে। আমি আওয়ামীলীগের একজন প্রবীণ নেতা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ রয়েছে আমার মাঝে। তাই আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় সমর্থনের পাশাপাশি আটঘরিয়া পৌরবাসীর সমর্থন ও দোয়া নিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করতে চাই। আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নাই, আমি যতদিন পৃথিবীতে বেঁচে আছি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশকে বুকে ধারণ করে জনকল্যাণকর কাজে নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই।’

দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী উল্লেখ করে এই প্রবীণ নেতা আরও বলেন, ‘আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হলে আধুনিক পৌরসভার রূপকার সফল সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস এমপি এবং বাংলার সফল প্রধানমন্ত্রী মমতাময়ী মা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও বেশি শক্তিশালী করবো। পাশাপাশি আটঘরিয়া পৌরসভাকে আধুনিক ও ডিজিটাল পৌরসভায় রূপান্তরিত করবো। মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো। ইনশাল্লাহ।