পাবনার ঈশ্বরদী রেল জংশনের শতবর্ষী ফুটওভার ব্রীজটি চলাচলে ঝুঁকিপুর্ন

পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনের ফুটওভার ব্রীজটি ব্রিটিশ আমলে নির্মিত। বয়স প্রায় ১০০ বছর ছুঁই ছুঁই। ১৯২৩ সালে রেলওয়ে যাত্রীদের স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে যাতায়াত এবং শহরের পূর্ব ও পশ্চিম এলাকার মানুষদের চলাচলের জন্য ফুটওভার ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়। রেলওয়ে টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে যাত্রীদের এই ফুটওভার ব্রীজ দিয়ে প্ল্যাটফর্মে যেতে হয়।

তবে শতবর্ষী এই ফুটওভার ব্রীজের সিঁড়ির বেশিরভাগ ধাপ ভেঙে গেছে। ভাঙা সিঁড়ির ধাপ ওপর দিয়ে চলাচল করা চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ফুটওভার ব্রীজটির পাশেই আরেকটি নতুন ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু হলেও দেড় বছরেও তা শেষ হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়ে পুরাতন এ ব্রীজ দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে ট্রেনযাত্রীসহ সবাইকে।

সরেজমিন দেখা গেছে, রেলওয়ে টিকিট কাউন্টার থেকে ফুট ওভারব্রীজে ওঠার সিঁড়ি দিয়ে যাত্রীরা খুব ধীরে ধীরে চলাচল করছে। সিঁড়ির কংক্রিটের ধাপগুলো ভেঙে রড বের হয়ে গেছে। সিঁড়ির ধাপের দিকে তাকালে অনেকেই ভয়ে আঁতকে ওঠেন। অসুস্থ ও বয়স্করা সিঁড়ি দিয়ে চলাচল করতে চান না। প্রতিদিন এই ফুটওভার ব্রীজ দিয়ে অফিস, স্কুল-কলেজের শত শত শিক্ষার্থীসহ ব্যবসায়ী, যাত্রী, পশ্চিম এলাকা থেকে পূর্ব এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করেন।

ঈশ্বরদী পৌর শহরের স্কুলপাড়া এলাকার বাসিন্দা জালাল উদ্দিন বলেন, ঈশ্বরদী শহরের পশ্চিমাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের মানুষের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি করেছে এ ফুটওভার ব্রীজ। অনেক আগে তৈরি হওয়ায় ব্রীজটির পাটাতন, সিঁড়ির ধাপ বহুবার পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে আবারও ভেঙে গেছে সিঁড়ির কংক্রিটের ধাপগুলো। এগুলো পরিবর্তন করা খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

কলেজে যেতে ফুটওভার ব্রীজটি ব্যবহার করেতে হয় নুসরাত জাহান অহনার। তিনি বলেন, সিঁড়ির ধাপগুলো ভেঙে রড বেরিয়ে গেছে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে দ্রুত সিঁড়ির ধাপগুলো পরিবর্তন করা প্রয়োজন।

ট্রেনের যাত্রী আনিসুর রহমান বলেন, প্রতি সপ্তাহে আমি ট্রেনে যাতায়াত করি। ফুটওভার ব্রীজটির সিঁড়ির ধাপগুলো ভেঙে যাওয়ায় যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এটি দেখেও না দেখার ভান করে বসে রয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে সিঁড়ি থেকে পড়ে প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটতে পারে।

এ বিষয়ে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট (এসএস) মহিবুল ইসলাম বলেন, ব্রীজটির সিঁড়ি দিয়ে যাতায়াত অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সিঁড়ির ধাপগুলো দ্রুত পরিবর্তনের জন্য সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে সেতু প্রকৌশলীকে অবগত করা হবে।

পাকশী বিভাগীয় রেল সেতু প্রকৌশলী নাজিব কাওছার বলেন, ফুটওভার ব্রীজের সিঁড়ির সমস্যার বিষয়টি আমি জানি। খুব দ্রুতই সিঁড়ির ধাপগুলো পরিবর্তন করা হবে। এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে।

নতুন ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণকাজের অগ্রগতি বিষয়ে তিনি বলেন, কাজ চলমান। আশা করি আগামী চার মাসের মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষ হবে।