পোষা প্রাণী কি শ্বাসযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর?

পোষা প্রাণী পছন্দ করেন না এমন মানুষের সংখ্যা নিতান্তই কম। আজকাল শখের বশে অনেকে বাড়িতে কুকুর, বিড়াল ও খরগোশ পুষে থাকেন। আর অনেককে দেখা যায় বাড়ির বারান্দায় ও ছাদে খাঁচার মধ্যে পাখিও পোষেন।

পোষা প্রাণীর মধ্যে বিড়াল ও কুকুরই সবচেয়ে জনপ্রিয়। কিন্তু মনে রাখবেন, যাদের হাঁপানি, অ্যালার্জি ইত্যাদি রোগ রয়েছে, তাদের জন্য এই শখ ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তবে শুধু যে বিড়াল-কুকুর তাই নয়, ঘোড়া, ইঁদুর, গিনিপিগ, খরগোশ ও পাখি ক্ষতিকর হতে পারে।

এ বিষয়ে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটালের সাবেক মহাপরিচালক গোলাম মহিউদ্দিন আকবর যুগান্তরকে বলেন, শখের বশে আমরা অনেকেই বাড়িতে কুকুর, বিড়াল ছাড়াও অন্য প্রাণী পুষে থাকি। বাড়িতে পোষা প্রাণী রাখতে যেসব নিয়মকানুন মানতে হয়, আমরা বেশির ভাগ মানুষ এর কোনো কিছুই মানতে চাই না। প্রাণীগুলো শ্বাসযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়া এগুলো বিভিন্ন রোগ ছড়ায়।

তিনি বলেন, কুকুর ও বিড়ালের মল ও লালা খুবই ক্ষতিকর। এছাড়া কুকুর-বিড়াল বাইরে ঘোরাফেরা করলে বিভিন্ন রোগের বাহক হতে পারে। যা ঘরে বহন করে নিয়ে আসে এবং আপনাকে অসুস্থ করে।

আসুন জেনে নেই পোষা প্রাণী কীভাবে শ্বাসযন্ত্রের ক্ষতি করে-

বিড়াল: বিড়ালের অ্যালার্জেনের মূল উৎস হচ্ছে তাদের ত্বকে অবস্থিত তৈলাক্ত গ্রন্থি। এই গ্রন্থি থেকে কিছু অ্যালার্জেন উপাদান নিঃসৃত হয় ও চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বিড়ালের চুলকানো অসুখ খুবই বিপজ্জনক। বিড়াল নিজে বছরের পর বছর এই রোগের জীবাণু রক্তের মধ্যে বহন করতে পারে। অসুস্থ বিড়ালের ক্ষত থেকে মানুষের শরীরেও এটি সংক্রমিত হয়ে থাকে। মানুষের এ রোগ হলে অল্পক্ষণের জন্য জ্বর হয় এবং চুলকানির ফলে বিভিন্ন জায়গা ফুলে যায়।

কুকুরের লোম থেকে অ্যালার্জি: কুকুরের মূল অ্যালার্জেন হচ্ছে লালা। এছাড়া কুকুরের লোম থেকে অনেক সময় শিশুদের শরীরে অ্যালার্জির সংক্রমণ হয়ে থাকে। পরবর্তী পর্যায়ে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। তাছাড়া কুকুর জলাতঙ্ক রোগের ভাইরাস বহন করে। উন্নত দেশে প্রতিটি কুকুরকেই জলাতঙ্ক রোগের টিকা দিতে হয়। তবে আমাদের দেশে এ ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষই উদাসীন। তাই বাড়িতে কুকুর থাকলে এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।

অন্যান্য পোষা প্রাণী : কুকুর-বিড়াল ছাড়াও অন্য কিছু পশু অ্যালার্জির কারণ হতে পারে, যেমন- ঘোড়া, ইঁদুর, গিনিপিগ, খরগোশ ও পাখি। এদের শরীরের নানা উপাদানের সংস্পর্শে এলে আক্রান্ত সংবেদনশীল ব্যক্তির শ্বাসতন্ত্র পেশি সংকুচিত হয়, নানা রাসায়নিক নিঃসৃত হয়, শ্বাসনালি সরু হয়ে পড়ে। ফলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়।