প্যারাডাইস পেপার্স কেলেঙ্কারিতে কোনো বাংলাদেশির নাম আছে?

প্যারাডাইস পেপারসে ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং ভারতের মেগা স্টার অমিতাভ বচ্চনসহ অনেকের দুর্নীতির তথ্য ফাঁস হলেও এই গোপন নথিতে এখনও পর্যন্ত কোন বাংলাদেশির নাম পাওয়া যায়নি।

অবশ্য এর আগে আলোচিত পানামা পেপারসের তালিকায় বাংলাদেশের ৫টি কোম্পানি এবং ৩৫টি ঠিকানা পাওয়া যায়। তাই প্যারাডাইস পেপারসের ক্ষেত্রেও তেমনি আশঙ্কা করা হচ্ছিল।

প্যারাডাইস পেপারসে বিশ্বের ২৫ হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক লেনদেন ও মালিকানা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য ফাঁস হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক পৃথিবীর ১৮০টি দেশের ধনী, সুপরিচিত ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ফাঁস হওয়া এই নথিতে রয়েছে ১৯৫০ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত প্রায় ৭০ বছরের তথ্য।

ফাঁস করা তথ্যে দেখা যায়, অফশোর সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপলবাইয়ের সবচেয়ে বেশি ক্লায়েন্টের ঠিকানা যুক্তরাষ্ট্রের, ৩১ হাজারের বেশি। এরপর প্রায় ১৪ হাজার রয়েছে যুক্তরাজ্যের ঠিকানা এবং ১২ হাজারেরও বেশি বারমুডার।

সদ্য ফাঁসকৃত প্যারাডাইস পেপারসের নথিতে কয়েকজনের নাম বেশি আলোচনা সৃষ্টি করেছে। এদের মধ্যে রয়েছেন-

রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ
প্যারাডাইস পেপারসের তথ্যে দেখানো হয়েছে, ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ কেম্যান আইল্যান্ড ও বারমুডায় ১০ মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করেছেন। ২০০৪ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে অর্থসংক্রান্ত রাণীর ব্যক্তিগত ম্যানেজার ডাচি অব ল্যাংকেস্টারে এই অর্থ বিনিয়োগ করেন।

ডাচি অব ল্যাংকেস্টারের কাছে ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রচুর সম্পদ গচ্ছিত রয়েছে। রাণীর জন্য সম্পদ বৃদ্ধি করা তার দায়িত্ব। এক বিবৃতিতে তারা ব্রিটেনের বাইরে বিনিয়োগের কথা স্বীকার করেছেন। তবে তাদের দাবি, আইন মেনেই বিনিয়োগ করা হয়েছে।

জাস্টিন ট্রুডো
গোপন নথিতে দেখানো হয়েছে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নির্বাচনে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা স্টেফান ও তার প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬ কোটি ডলার বিনিয়োগ রয়েছে কেম্যান আইল্যান্ডে।

অমিতাভ বচ্চন
প্যারাডাইস পেপারস বলছে, বলিউড তারকা অমিতাভ বচ্চনের একটি ডিজিটাল মিডিয়া কোম্পানিতে অংশীদারিত্ব রয়েছে, যা ২০১২ সালে বারমুডাতে যাত্রা শুরু করে।

মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রস
ট্রাম্পের বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রসের এমন একটি কোম্পানিতে শেয়ার আছে, যার সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক রয়েছে বলে প্যারাডাইস পেপারসের তথ্যে উঠে এসেছে। ওই কোম্পানিতে দু’জন ব্যক্তি আছেন, যারা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত। শুধু তাই নয়, ওই দুই ব্যক্তির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে।

বিবিসি জানায়, উইলবার রসের ‘নেভিগেটর হোল্ডিংস’ নামে একটি শিপিং কোম্পানিতে মালিকানায় অংশীদারিত্ব রয়েছে, যা রুশ জ্বালানি কোম্পানি সিবুর-এর জন্য তেল ও গ্যাস পরিবহন করে লাখ লাখ ডলার আয় করে থাকে।

ম্যাডোনা
বারমুডার একটি চিকিৎসা বিষয়ক সরবরাহ কোম্পানিতে ম্যাডোনার অংশীদারিত্ব রয়েছে বলে প্রকাশ করা হয়। কিন্তু গণমাধ্যমের খবর মতে, কোম্পানিটির নিবন্ধন হয় ১৯৯৭ সালে এবং বন্ধ হয় ২০১৩ সালে।

এছাড়াও আরও অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির গোপন সম্পদের তথ্য প্রকাশ করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে প্যারাডাইস পেপারস।