প্রতিদিন ছয় ঘণ্টা সিএনজি স্টেশন বন্ধ রাখার নির্দেশ

সারাদেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবা এবং গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে গাড়িতে আবারও সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস (সিএনজি) সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরককার।

সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা নিশ্চিত করেছেন উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন। তিনি জানান, বুধবার থেকে প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সিএনজি স্টেশনগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এর আগে সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

রোববার মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব সায়মা আক্তারের সই করা চিঠিটি পাঠানো হয়, যা সোমবার গণমাধ্যমের হাতে আসে। চিঠিতে পেট্রোবাংলাকে জাতীয় তিনটি দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিতে বলা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, গত ১৯ জুলাই গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহের স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন নিয়ে বৈঠকে সিএনজি স্টেশন বন্ধের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টার উপস্থিতিতে এবং প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভাটি হয়।

সেদিনের নেয়া সিদ্ধান্তটি ছিল, ‘বিদ্যুতের দৈনিক পিক-আওয়ারে সিএনজি স্টেশন বন্ধ রাখতে হবে।’

গ্যাস সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যহত হওয়ায় পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরেই প্রায়ই দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছিল। তবে বিদেশ থেকে তরল গ্যাস বা এলএনজি আমদানি শুরু হওয়ার পর থেকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই পথে আর হাঁটেনি সরকার। তবে এলএনজি নিয়েও এখন সংকট তৈরি হয়েছে।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানিতে কিছুটা ঘাটতি পড়েছে। সেই ঘাটতি পূরণে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ঠিক রাখতে চায় সরকার।

এই মুহূর্তে দেশে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ৫৭টি। যেখানে মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১১ হাজারেরও বেশি।

এলএনজি ঘাটতি থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদন যেমন কমবে, তেমনি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করাও কঠিন। আর তাই পিক-আওয়ারে অর্থ্যাৎ বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সিএনজি স্টেশন বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বহাল রাখার কথা বলা হলেও, অক্টোবরের মাঝামাঝি এসে তুলে নেয়া হতে পারে।