প্রথমবার পদ্মা সেতু পাড়ি দিলো ট্রেন

পদ্মাপাড়ের মানুষের আরও এক স্বপ্নজয় হলো। সড়কপথে যানচলাচলের ১০ মাসের মাথায় এবার সফলভাবে পদ্মা সেতু পাড়ি দিলো ট্রেন।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্পের জন্য প্রস্তুত প্রায় ৪২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় পরীক্ষামূলক ট্রেন।

এরপর বিকেল ৩টা ২০ মিনিটের দিকে প্রথমবারের মতো পদ্মা পাড়ি দিয়ে মাওয়া স্টেশনে পৌঁছায় ট্রেনটি।

পদ্মা সেতুতে গাড়ির পর এবার চলল ট্রেন। মাওয়া থেকে ভাঙা পর্যন্ত ৪২ দশমিক ২০ কিলোমিটার রেলপথে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।

এদিন দুপুর দেড়টায় পরীক্ষামূল ট্রেন চলাচল উদ্বোধন শেষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে রেলপথমন্ত্রী বলেন, রেল চালু হওয়ায় পদ্মা সেতু পূর্ণতা পেল। এতে রেল যোগাযোগে আমূল পরিবর্তন আসবে।

ফরিদপুরের ভাঙা রেলওয়ে স্টেশন থেকে সাত কোচ ও দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট এক সেট বিশেষ ট্রেন পদ্মা প্রথমবারের মতো পদ্মা পাড়ি দেয়। ট্রেনে রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গনমাধ্যমকর্মী, আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা। তাদের নিয়ে ট্রেনটি মাওয়া অংশে পৌঁছায়।

মাওয়া রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে সেখানে সংবাদ সম্মেলন করেন রেলপথ মন্ত্রী।
সেখানে তিনি বলেন, পদ্মা রেল চালুর ফলে মোংলা পোর্টের সঙ্গে দূরত্ব কমবে। ভারতের সঙ্গে দূরত্ব কমবে। আমাদের প্রকল্পের নির্ধারিত তারিখের মধ্যেই এ প্রকল্প শেষ হবে। আমরা আজ মাওয়া থেকে ভাঙা পর্যন্ত পরীক্ষামূলক চালু করলাম। ঢাকা থেকে ভাঙা পর্যন্ত আগামী সেপ্টেম্বরে চালু করতে পারব। এই রেলপথ শুধু বাণিজ্যিক বা অর্থনৈতিক সুবিধাই এনে দেবে না, যাত্রী পরিবহনও সহজ করবে।

দেশের অবকাঠামো খাতের অন্যতম বড় প্রকল্প পদ্মা রেল সংযোগ সেতু প্রকল্প। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যা পদ্মা সেতুর চেয়ে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা বেশি।

গত বছরের ২৫ জুন জমকালো আয়োজনে উদ্বোধন করা হয় পদ্মা সেতু। এর এক দিন পর ২৬ জুন গণপরিবহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সেতু দিয়ে সড়ক ও রেল একসঙ্গে চলাচলের কথা থাকলেও রেল লাইন বসাতে দেরি হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। এরপর গত বছরের ২০ আগস্ট পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপন কাজের উদ্বোধন করেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তবে বিভিন্ন জটিলতায় পুরোদমে কাজ শুরু হয় গত বছরের নভেম্বর থেকে। টানা পাঁচ মাসে কাজ সমাপ্ত হওয়ায় পরীক্ষামূলক রেল চলাচল শুরু হয়েছে।

প্রকল্পের নথি অনুযায়ী, ঢাকা থেকে মাওয়া- ভাঙা হয়ে যশোর পর্যন্ত এই রেলপথের দৈর্ঘ্য হবে ১৭২ কিলোমিটার। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৪ সালের ৩০ জুন।