প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যাওয়ার কারণে চাকরি গেল ইমামের

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে যাওয়ার অপরাধে মসজিদের ইমামকে আওয়ামী লীগার আখ্যা দিয়ে ইমামতি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি ছিলেন। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (৭ এপ্রিল) জুম্মার নামাজের পর সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের লালপুর (দক্ষিণপাড়া কান্দাহাটি) গ্রামের জামে মসজিদে।

বরখাস্ত হওয়া ইমাম মাওলানা মোবারক হুসাইন (৩২) জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের শরিফপুর গ্রামের উষণ আলীর ছেলে। তিনি দীর্ঘ ৮ বছর ধরে ওই মসজিদে ইমামতি করে আসছিলেন। এছাড়া ওই মসজিদের ইসলামিক ফাউন্ডেশন অধীনস্থ সহজ কুরআন শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষকও ছিলেন।

বরখাস্ত হওয়া ইমাম মাওলানা মোবারক হুসাইনের সঙ্গে বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেলা শহরের ট্রাফিক পয়েন্ট সংলগ্ন একটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে কথা হয়। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যাওয়ায় আমি ‘আওয়ামী লীগার’ হয়ে গেছি, আমার পেছনে নামাজ পড়া যাবে না এমন অভিযোগ এনে দুর্ব্যবহার করে আমাকে শুক্রবার (৭ এপ্রিল) জুম্মার নামাজের পর মসজিদ থেকে বিদায় করে দেয়া হয়।

তিনি অভিযোগ করেন, আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে মসজিদের ভেতরেই আমাকে লাঠি দিয়ে মারতে উদ্যত হয়েছিলেন গ্রামের দারু মিয়া। তিনি গ্রামের মৃত আব্দুল আহাদের ছেলে। আমাকে নানাভাবে অপমান করা হয়েছে। মান-সম্মানের ভয়ে আমি চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে গিয়েই কি আমি আওয়ামী লীগার হয়ে গেলাম?

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বর্তমানে নিজ বাড়িতে অসহায় অবস্থায় রয়েছি। কিছু জমি করেছিলাম তাও পানিতে তলিয়ে গেছে। একদিকে বেকার অন্যদিকে সংসার, এখন কি করবো ভেবে উঠতে পারছি না।

ইমামের দেয়া বক্তব্য অনুযায়ি, গত ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৪২তম বর্ষপুর্তির অনুষ্ঠানে ঢাকায় গিয়েছিলাম। সেই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মসজিদ কমিটির সবাইকে অবগত করেই প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফিরে আসার পর আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, আমি নাকি আওয়ামী লীগার হয়ে গেছি।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা হেলাল আহমদ বলেন, ইমাম মাওলানা মোবারক হোসেন খুব ভালো মানুষ ছিলেন। আমি চেষ্টা করেছিলাম বিষয়টি বসে নিস্পত্তি করতে। কিন্তু কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যাওয়ার অপরাধে আওয়ামী লীগার বানিয়ে অপমান করে উনাকে বিদায় করা হয়েছে।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ক্বারী আব্দুল জব্বার বলেন, ইমাম সাহেবকে অপমান করে বিদায় করা হয়েছে। দারু মিয়া ইমাম সাহেবকে ধমক দিয়েছেন।