চাকরি পেয়েছিল প্রেমিক, কিন্তু তার আগেই প্রেমিকার বিয়ে ঠিক

প্রেমিকাকে হত্যা করে প্রেমিকের আত্মহত্যা

১০ মার্চ কথা ছিল প্রেমিকার বিয়ে ঠিক হওয়ার। সেই খবর জানতে পেরে প্রেমিকা অন্বেষা চৌধুরী আশামনিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করলেন প্রেমিক জয় বড়ুয়া।

রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে।

রাউজান থানা পুলিশ ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মহামুনি গ্রামের ভগবান দারোগা বাড়ির সুব্রত মুৎসুদ্দির বাড়ি থেকে প্রেমিক যুগলের মরদেহ উদ্ধার করেন।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল হারুন জানান, প্রেম ঘটিত ঘটনায় এক তরুণীকে হত্যার পর তরুণ আত্মহত্যা করেছে। রাত ১টার দিকে মরদেহ দুটি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। তদন্তের ঘটনা বিস্তারিত জানা যাবে।

নিহত প্রেমিকা মহামুনি গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উদয়ন চৌধুরীর বাড়ির রনজিৎ চৌধুরী বাবলুর মেয়ে অন্বেষা চৌধুরী আশামনি (১৯) এবং প্রেমিক একই গ্রামের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিলেন্দু বড়ুয়া নিলুর ছেলে জয় বড়ুয়া (২৬)।

১৯ বছর বয়সী প্রেমিকার নাম অন্বেষা চৌধুরী আশামনি। তিনি মহামুনি গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উদয়ন চৌধুরীর বাড়ির রণজিৎ চৌধুরী বাবলুর মেয়ে। অন্বেষা নোয়াপাড়া কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তবে কলেজে তার যাওয়া-আসা ছিল খুবই কম। তবে তিনি টিউশনি করতেন নিয়মিত।

অন্যদিকে ২৬ বছর বয়সী প্রেমিকের নাম জয় মুৎসুদ্দী। তিনি ওই গ্রামেরই ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিলেন্দু বড়ুয়া নিলুর ছেলে। এসএসসি পাশ করার পর থেকে তিনি বাবার চায়ের দোকান দেখাশোনা করতেন। তবে ১ মার্চ থেকে একটি চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তার।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অন্বেষা ও জয় দুজনই এবার এসএসসি পাশ করেছে। দু’বছর ধরে তাদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর মধ্যে আগামী ১০ মার্চ অন্বেষার বিয়ে ঠিক করে পরিবার। বিষয়টি জানতে পেরে রোববার মেয়েটিকে নিজ বাড়িতে ডেকে নেয় জয়। রাত ৯টার দিকে জয় তার চাচার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে অন্বেষাকে নিয়ে যায়। সেখানে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় অন্বেষাকে। প্রথমে শ্বাসরোধে হত্যার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলায় ছুরিকাঘাত করে জয়। পরে নিজেও গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।

পাহাড়তলী ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য অর্পিতা মুৎসুদ্দি মুন্নি বলেন, আমি রাত সাড়ে ৯টার দিকে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখি চৌকির উপর ছেলের মরদেহ এবং মাটির উপর গলায় ফাঁস ও ছুরিবিদ্ধ মেয়ের মরদেহ পড়ে আছে।

তিনি আরও জানান, অন্বেষা বিকাল ৫টার দিকে টিউশনিতে বের হয়। আগামী ৭ মার্চ অন্বেষা চৌধুরীর অশীর্বাদ অনুষ্ঠান এবং ১০ মার্চ তার বিবাহ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল।

এদিকে, প্রেমের ঘটনার বিষয় সম্পর্কে কিছুই জানে না বলে জানান আত্মহত্যা করা জয় বড়ুয়ার বাবা।

অন্বেষা চৌধুরীর পরিবারের দাবি, ১০ মার্চ তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। সেই বিয়েতে মেয়ের সম্মতি ছিল। বিয়ের বাজারও করেছে সে।