ফণীর প্রভাবে খুলনায় নদীর পানি বেড়ে গেছে ৫-৬ ফুট

খুলনায় শুক্রবার সকাল থেকে আকাশ কালো মেঘ ছেয়ে গেছে। নদীতে ৫-৬ ফিট পানি বেড়েছে। অন্যদিকে ভ্যাপসা গরম কেটে দক্ষিণা বাতাস ক্রমে বাড়ছে। দুপুর ১২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়। আবহাওয়া অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে উপকূলের মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বে থাকা কয়রা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. জাফর রানা শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ প্রতিবেদককে জানান, কয়রা এলাকার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে আস্তে আস্তে যাচ্ছে। উপজেলার আবহাওয়া আস্তে আস্তে আকাশ কালো হচ্ছে । তারপরও সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে ১২৬ সদস্যের ৭টি টিম অল্প সময়ের মধ্যেই মাঠে নেমে পড়বে। মানুষকে নিরাপদে নিতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলেও জানান উপজেলা নিয়ন্ত্রণকক্ষের এই কর্মকর্তা।

সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা থাকায় কয়রা উপজেলার জনসাধারণ নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে যেতে শুরু করে। বিশেষ করে কয়রা সদর ইউনিয়নের ৩, ৪, ৫ ও ৬নং কয়রা সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে এবং উত্তর বেদকাশী, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের জন সাধারণ নিজেদের জানমাল রক্ষার্থে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছতে শুরু করে। কিন্তু আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে তাদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে আসে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়রায় মানুষের মধ্যে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারণ অমবস্যার গোন (সময়) হওয়ায় নদীতে ৫ থেকে ৬ ফুট পানি বেড়েছে।

স্থানীয়দের ভাষ্য, আইলার প্রাক্কালে যেমন তীব্র গরম অনুভব হয়েছিল, তেমনি মনে হচ্ছে। আর অমাবস্যার গোন হওয়ায় তারা বাঁধ ভাঙন ও বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন।

এদিকে জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দার বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে জেলার ৩২৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় এক হাজার ৯৫ জন ও দাকোপ উপজেলায় এক হাজার ৩৬৫ জন স্বেচ্ছাসেবকসহ ২ হাজার ৪৬০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি এবং নয়টি উপজেলায় নয়টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনকে সতর্ক করতে উপকূলীয় উপজেলাগুলোতে মাইকিং করা হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি সামাল দিতে ১১৪টি মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের উপ-সহকারী অমরেশ চন্দ ঢালী দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শুক্রবার এ প্রতিবেদককে বলেন, বাংলাদেশ থেকে ৫৩৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ফণী। মধ্যরাত সাড়ে ১২টার পরে হানা করার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আগে ভারতের উড়িষ্যায় আঘাত হানবে। যদি তাই হয়, তাহলে তখন ফণী দুর্বল হয়ে যাবে। বাংলাদেশে আর বেশি ক্ষতি হবে না।