ফোর মার্ডার ঘটনা শুনে ঢাকা থেকে কলারোয়ায় লুৎফুল্লাহ এমপি।। জড়িতদের শাস্তির দাবি

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের চারজনকে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে স্বজনদের সান্তনা ও সমবেদনা জানান এবং প্রাণে বেঁচে যাওয়া ৬ মাসের শিশু মারিয়ার খোঁজখবর নিলেন সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ।

বৃহষ্পতিবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে সেখানে গিয়ে মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি হত্যার শিকার ব্যক্তিদের মাগফিরাত কামনা করে দোষিদের দ্রুত শনাক্ত করে কঠোর শাস্তির দাবি জানান।

মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি ছিলেন ঢাকায়। দূর্ঘটনায় তার এক নিকট আত্মীয় ঢাকা সিএমএইচে চিকিৎসাধীন। তবে আজ (বৃহষ্পতিবার) কলারোয়ায় মর্মান্তিক ও নৃশংস হত্যাকান্ডের খবর শুনে তাৎক্ষনিক ঢাকা থেকে ছুটে আসেন কলারোয়ায়। বিকেলে সরাসরি যান উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলসি গ্রামের ওই বাড়িতে। সেখানে নিহতের গভীর শোকাহত স্বজনদের সান্তনা দেন। জীবিত ৬মাসের শিশুর খোঁজখবর নেন ও তার পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। একই সাথে ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানান।

এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি বলেন, ‘নিহতের ভগ্নিপতির সাথে কথা বলেছি। জীবিত শিশুর খোঁজখবর নিয়েছি। পরে থানায় গিয়েছিলাম। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাউদ্দীনসহ ঊর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য কথা বলেছি। তারা আমাকে বলেছেন, মামলার তদন্ত পজেটিভি ও অগ্রগতি হবে।’

তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, ‘ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবেই। অপরাধীরা কোন রকম ছাড় পাবে না।’

লুৎফুল্লাহ এমপি আরো বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। এই রকম ঘটনা যদি উদঘাটন না হয় তবে কোন পরিবার নিরাপদ নয়। সিরিয়াসলি গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি উদঘাটন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর আগে কলারোয়া সোনালী ব্যাংকের দুই গার্ড হত্যাকান্ডের ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটিত না হওয়ায় এই ধরণের ঘটনা ঘটাতে দূর্বৃত্তরা বা খুনিরা সাহস পায়।’

তিনি এরকম কুকর্মের সাথে জড়িত সকল অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করেন।

এসময় তার সাথে আরো উপস্থিত ছিলেন হেলাতলা ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগিখালী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল হাসান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিশা গ্রামে একই পরিবারের চারজনকে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- হেলাতলা খলসি গ্রামের শাহাজান আলীর ছেলে শাহিনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩৫), ছেলে সিয়াম হোসেন মাহি (১০) ও মেয়ে তাসনিম (৮)।

এ ঘটনায় শাহিনুরের ছয় মাস বয়সী অপর শিশু কন্যা সন্তান মারিয়া অক্ষত আছে।

নিহত শাহিনুর পোনা মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন। পুকুরে মাছের চাষ করতেন তিনি।

পুলিশের ধারণা, গতরাতে চিলেকোঠা দিয়ে (ছাদের ঘর) দিয়ে দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে এই চারজনকে কুপিয়ে হত‌্যা করেছে।

এ ঘটনায় তাদের আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশি ও সাধারণ মানুষের আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। চারটি তরতাজা মানব সন্তানের জবাই করা লাশ দেখে তারা এখন হতভম্ব। হত্যার আগে অথবা পরে তারা পরিবার প্রধান শাহিনুরের হাত পার রগ কেটে বেঁধে রেখে যায়।

খবর পেয়ে সকালেই পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একে এম নাহিদ, সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান (পিপিএম) বার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাহউদ্দিন, পিবিআই, র‌্যাব, ডিবি, সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল, কলারোয়ার ইউএনও মৌসুমী জেরিন কান্তা, এসিল্যান্ড আক্তার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।