বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে রোহিঙ্গারা

বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের জন্য ক্রমশ হয়ে হুমকি হয়ে উঠছে মিয়ানমার থেকে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। কক্সবাজারের টেকনাফ- উখিয়ায় রোহিঙ্গারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যাওয়ায় একচ্ছত্র আধিপত্য সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বাইরে থেকেও হুমকি সৃষ্টি করছে তারা। আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিনষ্টের শঙ্কা নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের।

মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে দু’জন মিয়ানমার, একজন ভারতীয় এবং একজন ফিলিপাইনের নাগরিককে আটক করে দেশটির কাউন্টার টেররিজম বিভাগ। আটককৃতদের মধ্যে রোহিঙ্গা যুবক আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির অভিযোগ আনা হয়েছে। পেশায় নির্মাণ শ্রমিক আবদুল খালেক আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি-আরসা’র সদস্য।

বিদেশের মাটিতে বসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে রোহিঙ্গাদের প্রাণনাশের হুমকি ভাবিয়ে তুলেছে কক্সবাজারের মানুষদেরও। কারণ টেকনাফ এবং উখিয়া উপজেলায় স্থানীয় বাসিন্দা ৫ লাখের বিপরীতে রোহিঙ্গাদের অবস্থান ১০ লাখের উপরে।

কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান বলেন, তাদের কঠোর নজরদারির মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এরইমধ্যে তারা অনেককে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। এতে আমরা শঙ্কিত।

রোহিঙ্গা প্রতিরোধ ও প্রত্যাবাসন কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহমুদুল হক চৌধুরী বলেন, তাদেরকে নজরদারির মধ্যে নিয়ে আসা দরকার। দেশে কিংবা বিদেশে তারা কোনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কিনা কিংবা বিদেশি কোনো এনজিও তাদের অন্যায় কিছুতে মদদ দিচ্ছে কিনা তা নজরদারিতে রাখা দরকার।

প্রথম থেকেই বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা যেমন নানা ধরণের অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িয়ে ছিলো। এখন তাদের ব্যবহার করে বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটতে পারে বলে শংকা নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর অব. এমদাদুল ইসলাম বলেন, পারষ্পারিক ভূকৌশলগত স্বার্থের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করার জন্য অনেকে উঠে পড়ে লাগবে। সেখানে রোহিঙ্গারা যুক্ত হয়ে পড়বে। এসব কারণে রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি হুমকিতে রয়েছে।

মূলত আশির দশকের শুরুতে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসতে শুরু করে। এর মধ্যে ২০১২ সালে প্রথমবার এবং ২১০৬ সালে দ্বিতীয়বার এবং সর্বশেষ ২০১৭ সালের আগষ্ট মাসে বাংলাদেশে ব্যাপক হারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে। যার সংখ্যা ১১ লাখের বেশি।