বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই : মির্জা ফখরুল

‘করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে’—প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী দুবাইয়ে গেছেন। যাওয়ার আগে তিনি কিছু বক্তৃতা দেন। তার মধ্যে একটি জায়গায় বলেছেন, করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। কিন্তু আমি তাকে জিজ্ঞেস করতে চাই, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ কবে থেকে শুরু হলো, আর কবে থেকে এ দেশের মানুষ চিৎকার করছে, তেল-চাল-ডালের দাম কমাও।’

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মঙ্গলবার বেলা পৌনে একটার দিকে এক বিক্ষোভ সমাবেশে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, তেল-গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকারের বাজারের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কারণ, সব সিন্ডিকেটের প্রধান হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতারা। দেশে যত চাঁদাবাজি, ঘুষ খাওয়া—সবকিছুর মূলে এই আওয়ামী লীগ।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অনেক অপরাধ। এ অপরাধের হিসাব দিতে পারবেন না। এই সরকার যদি আরও কিছুদিন ক্ষমতায় থাকে, তাহলে দেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। এ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে প্রশাসন, আমলাতন্ত্রকে পরিকল্পিতভাবে দলীয়করণ করেছে, আদালতকে ধ্বংস করেছে।’

বর্তমান সরকারের দিন ফুরিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ভালোয় ভালোয় পদত্যাগ করুন। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করুন।

বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সারা দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে— দেশে ২ শতাংশ দরিদ্র বেড়েছে। মানুষ বলতে পারে না। মানুষ মুখোশ পরে টিসিবির লাইনে দাঁড়ায়। সে লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। মানুষ একটু চাল-ডাল-আলুর জন্য ধাক্কাধাক্কি, মারামারি করে।

দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে আর সরকার নির্বিকার রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম লাগামহীন। করোনার কারণে শিল্পকারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। বেকারত্ব বাড়ছে। নতুন কোনো শিল্পকারখানা নেই।

বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম, পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন।

বক্তৃতা করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, সরকারি দলের লোকদের বলব, ভালো হয়ে যান। ভোটাধিকার ফেরত দিন। দেশে যদি এত উন্নয়ন করেন, তাহলে জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে ভয় পান কেন?