বাজেটের সাড়ে ১০ শতাংশই যাবে ঋণের সুদ পরিশোধে

২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রীর দেয়া হিসাবে মোট বাজেটের ১০ দশমিক ৪ শতাংশই ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হবে। চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বিশালাকার বাজেটের ৪১ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা খরচ হবে এ খাতে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ‘উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের’ শিরোনামে বাজেট বক্তৃতা উপস্থাপন করেন।

এবারের প্রস্তাবিত বাজেট শুধু আকারের দিক থেকেই নয়, ঘাটতির দিক থেকেও অতীতের রেকর্ড ভাঙবে। বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে এক লাখ ১২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। চলতি বাজেটে যা ছিল ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা।

বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৬০ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা ধার করবে সরকার। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ২৮ হাজার ২০৩ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র থেকে ৩০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাতে এক হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার পরিকল্পনার কথা নতুন বাজেটে তুলে ধরেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

ঘাটতির বাকি অর্থ বৈদেশিক ঋণের মাধ্যে মেটানো হবে। এসব ঋণের ও আগের ঋণের সুদ বাবদ ৪১ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

চলতি অর্থবছরে এ ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ৩৯ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা ৩৫ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদরা বলেন, বছর বছর সরকারের সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে। অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি- উভয় উৎস থেকে আগের নেয়া ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে। এর সঙ্গে নতুন নতুন ঋণের সুদও যোগ হচ্ছে।

তারা বলেন, ঘাটতি মেটাতে ঋণের নির্ভরতা কমাতে হবে। তা না পারলে সুদ পরিশোধের এ মাশুল দিয়ে যেতে হবে। সরকারের রাজস্ব আদায় আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এরপরও আমরা ঋণ নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছি না। ঋণ নিয়ে কোথায়, কীভাবে খরচ করা হচ্ছে এর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকা উচিত।

অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি মুহিতের একাদশ বাজেট। আর বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের দুই মেয়াদে টানা নবম বাজেট। এর আগে মুহিত ১৯৮২-৮৩ এবং ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরে দু’বার বাজেট পেশ করেন।