বিদায়ী বছরে মুসলিম বিশ্বের আলোচিত ৭ ঘটনা!

ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে বিদায় আরও একটি বছরের। করোনা মহামারির কারণে বিদায়ী বছর ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিশেষত করোনা মহামারির কারণে বছরটিকে মানুষ মনে রাখবে যুগের পর যুগ ধরে। ২০২০ বিদায়ী বছরে মুসলিম বিশ্বে ঘটে যাওয়া আলোচিত ৭ ঘটনা নিয়ে থাকছে আয়োজন।

বছরের আলোচিত ঘটনা:

ওমরা পালনে স্থগিতাদেশ:
করোনা মহামারিতে মুসলিম বিশ্বের জন্য সবচেয়ে বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটেছিল ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ওমরাহ পালনে স্থগিতাদেশ সৌদি সরকার। ওমরাহ পালন স্থগিত রাখা হয় পবিত্র কাবায়। নামাজ আদায় সীমিত করা হয় মসজিদুল হারাম ও সমজিদ-ই-নববীতে। সেকারণে বহু বছর ধরে বছরটিকে মনে রাখবে সমগ্র মুসলিম বিশ্ব।

নামাজ আদায়ে বিধি-নিষেধ সব মসজিদে:
২৬ মার্চ থেকে পুরোপুরি লকডাউন শুরু হয় সারা দেশে। এরপর জনসমাগম এড়াতে দেশের সব মসজিদে জুমা ও নামাজ আদায় পুরোপুরি সীমিত করে দেওয়া হয় ৬ এপ্রিল থেকে। বর্তমানেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায়ের নির্দেশনা রয়েছে দেশের সব মসজিদগুলোতে।

রমজান ও ঈদের নামাজ:
বিদায়ী বছরের সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে পালন হয়েছে পবিত্র রমজানুল মোবারক। সীমাবদ্ধতা ছিল ইফতার ও তারাবি আদায়ে। বাসায় বসে আদায় করতে হয়েছে তারাবির নামাজ। এমনকি ঈদুল ফিতর ও ইদুল আযহার নামাজও পড়তে হয়েছে পাড়া মহল্লার মসজিদে।

হজ পালন সীমিতকরণ:
স্মরণকালের সাক্ষী হয়ে থাকবে ২০২০ সালের হজ পালন। যেখানে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধুমাত্র সৌদিতে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা হজ পালন করেন। সীমিত পরিসরে ৩০ জুলাই হজ অনুষ্ঠিত হয়। যা ইতিহাসে বিরল ঘটনা।

তুরস্কের আয়া সোফিয়ায় ঐতিহাসিক নামাজ:
৮৬ বছর পর ২৪ জুলাই জুমার নামাজের মধ্য দিয়ে নামাজ শুরু করে তুরস্কের আয়া সোফিয়া মসজিদ। তুরস্কের সর্বোচ্চ আদালত এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে জাদুঘর থেকে বদলে মসজিদ হিসেবে ব্যবহারের অনুমোদন দেন বিশ্ববিখ্যাত স্থাপত্যনিদর্শন আয়া সোফিয়াকে।

ইসরায়েল-আরব সম্পর্ক:
ফিলিস্তিন ইস্যুতে এত বছর ধরে সরব-নিরব প্রতিবাদ করে আসলেও বিদায়ী বছরের শেষ দিকে ইসরায়েলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক স্থাপন তাও আবার চুক্তির করে। এটা নিশ্চয়ই বছরের উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলির একটি। যার মধ্যে রয়েছে আরব আমিরাত ও বাহরাইনের ১৫ সেপ্টেম্বর ও ২৪ অক্টোবর সুদান এবং ১০ ডিসেম্বর মরক্কোর সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্কের ঘোষণা।

দেশে দেশে ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক:
ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক দেশটির অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। যার প্রেক্ষাপট শুরু হয় দেশটির প্রেসিডেন্টের ইসলাম বিদ্বেষী মন্তব্যের জের ধরে। এর আগে ব্যঙ্গ চিত্রের পুনঃপ্রদর্শনী করে শার্লি হেবদো ম্যাগাজিন। এছাড়া শ্রেণিকক্ষে ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে ব্যঙ্গ চিত্র দেখানোয় ওই শিক্ষককে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে রাস্তায় নেমে ফরাসিদের আন্দোলন। সেই সঙ্গে আগুনে ঘি ঢালে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় মহানবীকে নিয়ে অশ্লীল দৃশ্য প্রদর্শনী। এরপর প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে রাষ্ট্রনেতা থেকে শুরু করে বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়। অবশেষে ৩১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে মহানবীর প্রতি মুসলমানদের অগাধ ভালোবাসা ও আবেগ- অনুভূতির কথা স্বীকার করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।