বিশ্বের সর্বোচ্চ তেল উৎপাদনকারী দেশ এখন যুক্তরাষ্ট্র

সৌদি আরব এবং রাশিয়াকে পেছনে ফেলে বর্তমানে তেল উৎপাদনকারী দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খোদ মার্কিন সরকারের তরফ থেকেই এমন দাবি করা হয়েছে। ১৯৭৩ সালের পর প্রথমবারের মতো সর্বোচ্চ অশোধিত তেল উৎপাদন করছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার মার্কিন এনার্জি ডিপার্টমেন্টের এক প্রতিবেদনে প্রাথমিকভাবে এই ধারণা প্রকাশ করা হয়।

গত দশকের তুলনায় মার্কিন তেল উৎপাদন দ্বিগুন হয়েছে। রাপিডান এনার্জি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট বব ম্যাকন্যালি বলেন, এটা একটি ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা এবং একটি স্মৃতিচিহ্ন যা স্মরণ করিয়ে দেবে যে, কখনও যুক্তরাষ্ট্রের তেল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাজি লাগতে আসবেন না।

ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিসট্রেশন (ইআইএ) বলছে, অশোধিত তেলের উৎপত্তিস্থল হচ্ছে টেক্সাস। পশ্চিম টেক্সাসের পারমিয়ান বেসিনে তেল উৎপাদন এত বৃদ্ধি পেয়েছে যে, গত ফ্রেব্রুয়ারিতেই যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে পেছনে ফেলেছে। দুই দশকের বেশি সময়ের ব্যবধানে সবচেয়ে বেশি তেল উৎপাদনকারী দেশ সৌদিকে টপকে সর্বোচ্চ আসনটি দখল করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইআইএর প্রাথমিক ধারণায় বলা হচ্ছে, গত জুন এবং আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের তেল উৎপাদন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। প্রতিদিন ১ কোটি ১ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন করা হয়েছে। এর ফলে ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারির পর প্রথমবারের মতো রাশিয়াকে পেছনে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে শেল মেশিনের কারণে তেলের বাজার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে গেছে।

স্বল্প সময়ের ব্যবধানের নিজেদের এই অর্জন হারাতে চায় না যুক্তরাষ্ট্র। ইআই-এর তরফ থেকে বলা হয়েছে, তাদের প্রত্যাশা ২০১৯ সালেও যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া এবং সৌদি আরবের চেয়ে বেশি তেল উৎপাদন করে এগিয়ে থাকবে।

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে সৌদি আরব, রাশিয়াসহ রফতানিকারক দেশগুলো যখন সরবরাহ কমাচ্ছে, তখন উৎপাদন বাড়িয়ে এ বাজারে দ্রুত আধিপত্য বিস্তার করার পথে হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্র। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল মধ্যপ্রাচ্যের তেলের বড় ক্রেতা এশিয়া এখন ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকছে।

বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের কাছ তেল কিনছে বহু প্রতিষ্ঠান। ২০১৫ সালে অশোধিত তেলের ওপর ৪০ বছরের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় কংগ্রেস। বর্তমানে দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ এবং চীনকে তেল সরবরাহ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

২০১৯ সালে তেল উৎপাদন বাড়িয়ে প্রতিদিন ১ কোটি ১৫ লাখ ব্যারেল করতে চায় ইআইএ। এই ধারা অব্যাহত থাকলে রাশিয়া এবং সৌদি আরবের চেয়ে শীর্ষ অবস্থান বজায় রাখা সম্ভব হবে। ২০১৭ সালে প্রতিদিন ৯৪ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই তুলনায় এখন অনেক বেশি তেল উৎপাদন করা হচ্ছে।