‘ভাসানচর ছাড়াও রোহিঙ্গাদের জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে’

গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে যেসব রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের একটি অংশকে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে আশ্রয় দেয়া হবে। এছাড়াও রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

রবিবার দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়ায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি উখিয়ার বালুখালী ২নং অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

জাতিগত সহিংসতার জেরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে গত ২৫ আগস্ট থেকে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে আশ্রয় দিতে গত মঙ্গলবার একনেকে একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে রোহিঙ্গা নাগরিকদের আবাসনের পাশাপাশি দ্বীপের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে কাদের বলেন, ‘একটি সীমাবদ্ধ স্থানে বিশাল জনগোষ্ঠীকে রাখা সরকার স্বাস্থ্যগতভাবে নিরাপদ মনে করছে না। এজন্য তাদের সুস্থ ও নিরাপদ জীবন-যাপনের লক্ষ্যে ভাসানচরে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ আগামী ছয় মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের একটি অংশকে ভাসানচরে নেয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রোহিঙ্গারা এদেশে যতদিন থাকে ততদিন তাদের খাদ্য ও মানবিক সেবা দেয়া হবে। চলমান বায়োমেট্টিক পদ্ধতিতে রোহিঙ্গাদের নিবন্ধের আওতায় আনার কাজ সম্পন্ন হলে প্রত্যাবাসন শুরু হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য অত্যন্ত আন্তরিক। রোহিঙ্গাদের যাবতীয় অধিকার আদায় করে তাদের মিয়ানমার ফেরত পাঠানোর জন্য সরকার কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করি সরকার এতে সফলকাম হবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের জনগণের মাঝে শেখ হাসিনার সাহসী ও মানবিক মনোভাব ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে সাত লাখ মিয়ানমারের নাগরিক এদেশে এসেছে। তাদের সসম্মানে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জনমত তৈরিতে সরকারের দক্ষতা প্রমাণ হয়েছে।’

এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, শামসুল হক এমপি, সাইমুন সরওয়ার কমল এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।