মাদারীপুরে পুলিশ কনস্টেবলের রিভলবারের আঘাতে নারীর মাথা ফাটানোর অভিযোগ

মাদারীপুরে রিভলবারের বাঁটের আঘাতে এক নারীর মাথা ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশের বিরুদ্ধে। সাদিয়া ইসলাম (৩৫) নামে আহত নারীকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে আহত নারীর রক্তাক্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনার পর থেকে আহত নারী ও তার পরিবার এখন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, মাদারীপুর শিল্প-সংস্কৃতি ও বাণিজ্য মেলার জনাকীর্ন মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় এক নারী চিৎকার করছে। তাকে অনেক মানুষ ঘিরে রয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে মাদারীপুর শিল্প-সংস্কৃতি ও বাণিজ্য মেলায় তবে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে। মেলায় শিশুদের চড়ার জন্য নৌকার দোলনায় ওঠাকে কেন্দ্র করে ওই নারীর সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন মাদারীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের দেহরক্ষী পুলিশ কনস্টেবল মো.ইব্রাহিম। এক পর্যায় ওই নারী ইব্রাহিমের রিভালবারের বাটের আঘাতে আহত হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডাসার উপজেলার পশ্চিম মাইজপাড়া গ্রামে থেকে সাদিয়া বেগম ইটালী প্রবাসী স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে আসেন। তিনি তাঁর সন্তানদের সাথে নিয়ে আগে ওঠেন নৌকা আকৃতির দোলনায়। এ সময় বিচারক মামুনুর রশীদের সন্তান সেখানে গিয়ে হাজির হলে সঙ্গে থাকা বিচারকের দেহরক্ষী মো. ইব্রাহিম ওই নারীকে তাঁর সন্তানদের নৌকার দোলনা থেকে নামাতে বলে ছিলেন। এই নিয়ে সাদিয়া বেগম ও মো. ইব্রাহিমের তুমুল বাকবিতন্ডা শুরু হয়। তর্কের এক পর্যায়ে ইব্রাহিম তাঁর কোমরে থাকা রিভলবারের বাঁট দিয়ে সাদিয়াকে আঘাত করলে তাঁর মাথা ফেটে রক্ত বের হতে শুরু করে। তখন হামলাকারীরা তাঁর হাতে থাকা মোবাইল ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।

পরে তাঁকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতলে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এসংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেলে এ বিষয় নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়।

এদিকে ঘটনার পরপরই বিচারক মামুনুর রশীদ ও তাঁর কয়েকজন সহকর্মীদের নিয়ে আহত ওই নারীকে হাসপাতালে দেখতে যান। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার এখন সঠিক বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে।

ভুক্তভোগীর স্বামী রাকিবুল হাসান বলেন, আমার স্ত্রীকে যখন হামলা করে আহত করে। তখন আমি বাঁধা দিতে গেলে আমাকেও আঘাত করে আহত করা হয়েছে। একজন বিচারকের দেহরক্ষী হওয়ার কারণে অন্যায়ভাবে আমাদের উপরে হামলা করেছে। এই ঘটনায় আমরা ন্যায় বিচার পাব কি না জানি না। তবে সরকারের কাছে ন্যায় বিচার দাবি করছি।

সাদিয়া বেগম বলেন, ম্যাজিষ্ট্রেটের দেহরক্ষী ইব্রাহিম প্রথমে কিল-ঘুষি দেন এবং পরে বন্দুক বের করে মাথায় একাধিক আঘাত করেন আমাকে।

পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার অভিযোগ না দিলেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এই বিষয়ে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ঘটনাটির সঠিক তদন্ত করা হবে। অভিযুক্ত দোষী হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।