‘মিয়ানমারকে চাপে রাখতে পাশে থাকবে সুইজারল্যান্ড’

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে সঙ্গে য়ে মিয়ানমারকে চাপে রাখতে সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আঁলা বেরসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানান শেখ হাসিনা।

একইসঙ্গে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সহায়তারও আশ্বাস দিয়েছে সুইজারল্যান্ড। আর রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে ১২ মিলিয়ন (এক কোটি ২০ লাখ) সুইস ফ্রাঁ দেওয়ার ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসেছেন সুইজারল্যান্ডের কোনো প্রেসিডেন্ট। তাঁর চারদিনের সফরের দ্বিতীয় দিন দুপুরে আসেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। এ সময় তাঁকে স্বাগত জানান শেখ হাসিনা।

এরপর দুই নেতা বসেন একান্ত বৈঠকে। তাদের মধ্যে কিছুক্ষণ আলাপ আলোচনার পর শুরু হয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, ২০৩০ সাল নাগাদ এসডিজির লক্ষমাত্রা অর্জনে সহায়তাসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বেশ কিছু বিষয় উঠে আসে। তবে সবচেয়ে গুরুত্ব পায় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের বিষয়টি। পরে যৌথ বিবৃতিতে তা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় আমরা রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি তুলে ধরেছি। সমস্যার শুরুটা মিয়ানমার থেকে, তাই সমাধানও তাদেরই করতে হবে। এ বিষয়ে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করে যথাযথ মর্যদায় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আমি জোর দিয়েছি। এই সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে মিয়ানমারকে চাপে রাখতে সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। এজন্য আমি তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। তেল-গ্যাস উত্তোলন, জ্বালানি, তথ্য-প্রযুক্তি, ওষুধসহ বেশ কিছু বিষয়ে দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণেও আমরা একমত হয়েছি।’

আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বরাবরের মতোই পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি।

আঁলা বেরসে বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় আমরা সবসময়ই বাংলাদেশের পাশে আছি। আগেও তাদের পুনর্বাসনে ৮ মিলিয়ন (৮০ লাখ) সুইস ফাঁ দিয়েছিলাম। এ বছর আরো ১২ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ সহায়তা দেব আমরা। এছাড়া অনেক বিষয়েই আমরা বাণিজ্য সম্প্রসারণে একমত হয়েছি। ২০৩০ সাল নাগাদ এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশকে আমরা সহায়তা করবো। এজন্য প্রয়োজনে একটি সমঝোতা স্মারকও সই করা হবে।’

মঙ্গলবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাবেন সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট। আর বুধবার তাঁর দেশে ফিরে যাবার কথা রয়েছে।

রোববার ঢাকায় আসেন সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট। তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।