মূর্তি সরালে মসজিদ সরাতে হবে, এতো বড় স্পর্ধা : এরশাদ

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতার অর্থ আমি বুঝি না। আমরা মুসলমানরা ইসলামের কথা বললে হয়ে যায় সাম্প্রদায়িকতা- এ কেমন বিচার। এ সময় তিনি সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামালের উদ্দেশে বলেন, মূর্তি সরালে মসজিদ সরাতে হবে এ দেশে এতো বড় স্পর্ধা?
মঙ্গলবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনিস্টিটিউটে সম্মিলিত জাতীয় জোটের ইফতার মাহফিলে এ কথা বলেন এরশাদ।
সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ভাস্কর্য অপসারণে নিয়ে সাম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে সুলতানা কামাল সেখানে উপস্থিত হেফাজতে ইসলামের মুফতি সাখাওয়াত হোসাইনের যুক্তির পাল্টা যুক্তি হিসাবে বলেন, ‘তার মানে কি? মূর্তি থাকবে না, তাহলে তো মসজিদও থাকার কথা না।’
টকশোতে মুফতি সাখাওয়াত ভাস্কর্য অপসারণ নিয়ে বলেন, এটা (ভাস্কর্য) মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত।’
মুফতি সাখাওয়াত বলেন, আদালত প্রাঙ্গণের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কোনো ধর্মের প্রতীক থাকতে পারে না।
সুলতানা কামাল এর উত্তরে বলেন, সেখানে তো মসজিদও আছে, তাহলে মূর্তি থাকবে না কেন?

এরশাদ ইফতার মাহফিলে বলেন, আমরা কোথায় যাচ্ছি, কোন অতলে তলিয়ে যাচ্ছি। দেশ এখন দুঃশাসনের মধ্য দিয়ে চলছে। জাতির কাছে প্রতিশ্রুতি করছি, দেশকে রক্ষা করবো, মানুষের বাড়ি ঘর, জান, মাল রক্ষা করবো।
তিনি বলেন, সত্যিকার জোট গঠন করেছি। সমাবেশ দেখে প্রাণ ভড়ে গেছে। পরিবর্তন আনতে হবে।
ইফতার মাহফিলে সম্মিলিত জাতীয় জোটের মুখপাত্র এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আগামী নির্বাচনে প্রতিটি আসনে জোটের প্রার্থী দেয়া হবে সকলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে।
তিনি জানান, এ জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে লিঁয়াজো কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা পর্যায়েও এমন কমিটি গঠন করা হবে। সেখান থেকে নির্বাচনে প্রার্থী দেয়া হবে।
এদিকে ইফতার মাহফিলে জাতীয় জোটের নেতাদের পরিচয় না জানার কারণে তাদের নাম ঘোষণা করতে সমস্যা হচ্ছে এমন কথা বারবার উচ্চারণ করেন সঞ্চালনার দায়িত্বে থাকা জাতীয় পার্টির দপ্তর সম্পাদক সুলতান মাহমুদ।
তিনি বারবার মঞ্চ থেকে বলছিলেন, আপনারা জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় অফিসে আসবেন। আপনাদের আমরা চিনি না। তাই নাম ঘোষণা করতে পারছি না।
এরপর সম্মিলিত জাতীয় জোটের শরিক জোট ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এম এ মান্নান ইসলামী জোটের নেতাদের পরিচয় করিয়ে দেন। এছাড়া জাতীয় জোটের নেতাদের পরিচয় করিয়ে দেন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান শেখ মোস্তাফিজুর রহমান।
এদিকে সন্মিলিত জোটের চেয়ারম্যানের সঙ্গে একই মঞ্চে বসার সম্মান পান ৫৮ দলের জোটের মধ্যে মাত্র ৫ জন। ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এম এ মান্নান, ইসলামী মহাজোটের আবু নাসের ওয়াহেদ ফারুকী, জাতীয় জোটের চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মনি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান শেখ মোস্তাফিজুর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ।
এছাড়া জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্যরা এবং তিন জন সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন ইফতার মাহফিলে।