যত ব্যবহার হলুদের

গাছের শিকড় থেকে প্রাপ্ত এক ধরনের মসলা জাতীয় উপাদান হলো হলুদ। রান্নায় হলুদ ব্যবহারের বিকল্প নেই। এছাড়াও চিকিৎসা ক্ষেত্রে এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। হলুদের বৈজ্ঞানিক নাম কারকুমা লঙ্গা। এটির মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি সিক্স, ফাইবার, কপার, পটাশিয়াম প্রভৃতি উপাদান।

হলুদ মূলত রান্নার জন্য এবং ত্বক পরিচর্যায় ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে হলুদ। হলুদকে সোনার মশলা হিসেবেও বলে থাকেন কেউ কেউ। এটি এমন একটি উপাদান, যা আপনার স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করবে। বহু যুগ ধরেই আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এটি ব্যবহার হয়ে আসছে। হলুদের উপকারিতা অনেক। এবং হলুদের ব্যবহারেও আছে নানা রকম।

রান্নার পাশাপাশি আরও বিভিন্নভাবে ব্যবহার করতে পারেন পুষ্টিগুণে অনন্য এই হলুদ। জেনে নিন হলুদের কিছু ব্যবহার সম্পর্কে।

১. রান্নার সময় বিভিন্ন ভাজা শাকসবজিতে এক চিমটে হলুদ দিন। এতে খাবারটি যেমন সুস্বাদু হবে, তেমনি হবে পুষ্টিকর। আলুভাজা কিংবা ফুলকপি দিয়ে কোন খাবার তৈরি করলে, এতে অল্প পরিমাণে হলুদ দিয়ে দিন। দেখবেন এতে খাবারটি দেখতে সুন্দর হবে এবং খাবারের দিক থেকেও তা পুষ্টিগত হবে।

২. খাওয়ার সঙ্গে সালাদ গ্রহণ করার সময় তার ওপরে কিছুটা হলুদের গুঁড়ো ছড়িয়ে দিন। এতে সালাদের গুণগতমান আরো বেড়ে যাবে এবং পুষ্টিকর হয়ে উঠবে।

৩. হলুদ ব্যবহার করতে পারেন মসলা চায়ে। আদা, গোলমরিচ, দারুচিনি দিয়ে বানানো চায়ের উপর সামান্য হলুদের গুঁড়া ছিটিয়ে দিন। চমৎকার ফ্লেভার চলে আসবে চায়ে। সর্দি-কাশিতেও উপকার পাবেন।

৪. স্যুপের মধ্যেই দিয়ে দিন এক চিমটে হলুদ। যা স্যুপকে আরো বেশি স্বাস্থ্যকর করে তুলবে।

৫. রূপচর্চায় ব্যবহার করতে পারেন হলুদ। বিভিন্ন ফেস প্যাকে হলুদের গুঁড়া বা পেস্ট মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বক হবে উজ্জ্বল।

৬. নারকেলের দুধের সাথে হলুদ ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে তার মধ্যে অল্প মধু দিয়ে একটি সুস্বাদু পানীয় তৈরি করে খেতে পারেন।

৭. খেজুর, মধু, দুধ মেশানো স্মুদির উপরে ১/৪ চা চামচ হলুদের গুঁড়া ছড়িয়ে দিন। বাড়বে পুষ্টিগুণ ও স্বাদ।

৮. দাঁত ঝকঝকে করতে হলুদের পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন।

৯. অল্প হলুদের গুঁড়া ও সি সল্ট একসঙ্গে মিশিয়ে পপকর্ন টপিং হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

১০. দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন হলুদ।

১১. হলুদের জুস বানিয়ে সাইট্রাস ফল ও আদা মিশিয়ে পান করতে পারেন। শরীরে জমে থাকা দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যাবে।

এছাড়াও আমাদের চারপাশে বিভিন্ন প্রসাধনী, টুথপেস্ট, সাবান রয়েছে যেগুলো হলুদ দিয়ে তৈরি হয়। ত্বক পরিচর্যার ক্ষেত্রে প্রয়োজনে সেগুলো ব্যবহার করতেই পারেন।

আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় হলুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। এর পাশাপাশি ত্বক পরিচর্যায়ও হলুদের ব্যবহার অনস্বীকার্য। সুতরাং আজ থেকেই রান্নাঘরের এই পরিচিত মসলাটিকে আপনার খাদ্যতালিকায় এবং রুপচর্চায় শামিল করুন। যাতে আপনি আরও স্বাস্থ্যকর এবং সুন্দর থাকতে পারেন।
তথ্যসূত্র: স্ট্যাইলক্রেজি