যশোরের ঝিকরগাছায় তদন্ত চলাকালে শিক্ষার্থীকে জুতাপেটা করলো ইউএনও

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুল হকের বিরুদ্ধে বদরুদ্দীন মুসলিম (বি.এম) হাইস্কুলের এক শিক্ষার্থীকে জুতা দিয়ে মেরে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট বদরুদ্দীন মুসলিম (বি.এম) হাইস্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অন্য শিক্ষার্থীদেরকে ব্লাকমেইল করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেন এক অভিভাবক। অভিযোগের তদন্ত করতে রবিবার (৩০ অক্টোবর) স্ব-শরীরে স্কুলে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। তদন্ত চলাকালে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে উপস্থিত হয়ে ৭ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর নিকট তিনি ঘটনার সম্পর্কে জানতে চান। ঐ শিক্ষার্থী ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নয় এবং সে কিছু জানেনা বলে। তখন তিনি (ইউএনও) উত্তেজিত হয়ে উপস্থিত সকলের সামনে নিজের পা থেকে জুতা খুলে ও হাত দিয়ে শিক্ষার্থীকে মারতে শুরু করেন।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের যখন ঐ শিক্ষার্থীকে জুতা দিয়ে মারেন তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষার্থীর পিতা ঝিকরগাছা কৃষি অফিসের গার্ডেনার মোঃ জাহিদুল ইসলাম।

অপরদিকে অভিভাবকরা বলছেন শিক্ষার্থী যদি অন্যায় করে তাহলে আইনের হাতে তুলে দেওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু তিনি বখাটের মত না করে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যেটা করার সেটা করলে ভালো হতো।

শিক্ষার্থীর পিতা জাহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি সরকারি চাকরি করি এ কারণে সংবাদ প্রকাশ না করাই ভালো। সংবাদ প্রকাশ করলে বলবেন আমি আমার ছেলে কে মেরেছি।

এদিকে অভিযোগ রয়েছে ইউএনও মাহবুবুল হক মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক এবং শিক্ষক দের সাথে বিভিন্ন সময়ে অশোভন আচরণ করে থাকেন।

ঝিকরগাছা ও চৌগাছা আসেন সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম বলেন, এমন ইউএনও আমি আগে দেখিনি, তিনি কারোও সাথেই ভালো ব্যবহার করেন না। মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষকদের সাথে তিনি অশোভন আচরণ করে থাকেন। এমনকি তিনি নিজের ক্ষমতা জানান দিতে আদালতের আদের অমান্য করে ঝিকরগাছার কাইয়ুম খোলা কলেজের শিক্ষকদের বেতন ভাতা বন্ধ করে রেখেছে।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুল হক বলেন, সালিসে ওই শিক্ষার্থীর পিতা তাকে মারপিট করেছে। আমি মারপিট করিনি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি ও অতিরিক্ত সচিব জনাব মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডল বলেন, ঘটনা সম্পর্কে আমাদের অভ্যন্তরীণ ম্যাকানিজম ব্যবহার করে খোঁজ নিবো। দায়ী হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের জেলা ও মাঠ প্রশাসন শাখার অতিরিক্ত সচিব মোঃ রাহাত আনোয়ার অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।