যশোরের মণিরামপুরে বিদ্যালয়ের জমি বিক্রির ঘটনা তদন্ত হতে যাচ্ছে !

মণিরামপুরের জিএইচ পাড়দিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জমি বিক্রি ঘটনা অবশেষে তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। গত ২৬ এপ্রিল বুধবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার বাদী এবং বিবাদী পক্ষকে প্রমানাদিসহ ৮মে- ২০২৩, দুপুর ১২টায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে হাজির হতে চিঠি দিয়েছেন।

সূত্রমতে- জিএইচ পাড়দিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অর্ধকোটি টাকা মূল্যের ৭ শতক জমি নামমাত্র মূল্যে বিদ্যালয়ের সভাপতি কামরুজ্জামান তার স্ত্রী জিনাত রেহেনা, শ্যালিকা হোসনেয়ারা এবং শ্যালক শরিফুল ইসলামের নামে দলিল সম্পাদন করে দেন। মণিরামপুর-রাজগঞ্জ প্রধান সড়কে পাড়দিয়া বাজারে পাড়দিয়া মৌজার ৫৩৯ খতিয়ানে ১২২৭ দাগে জমি পৃথক দুটি দলিলে নেওয়া হয়।

গত ১৪/০৩/২০২১ তারিখে দলিল নং- ২৬১২/২১, অপরটি ১৯/০৫/২০১৯ তারিখে ৩৯২০/১৯ নং দলিলে এই জমির দলিল সম্পাদন করেন। দীর্ঘদিন হলেও এই জমির রহস্য সম্পর্কে জানতেন না এলাকাবাসীসহ বিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষক-কর্মচারী। গত বছরে জুনের পর এই জমিতে মার্কেট করতে বহুতল নির্মাণের কাজ শুরু করেন। আন্ডাগ্রাউন্ড সহ দ্বিতল ভবনের ছাঁদ দেওয়ার কাজও সম্পন্ন করা হয়। এ সময় টনকনড়ে এলাকাবাসীর। তারা খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন জমি আপাতত বিদ্যালয়ের নেই। এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে সভাপতি এক রেজুলেশনের মাধ্যমে দত্তার ক্ষমতা নিয়ে স্বজনদের নামে লিখে নেন জমিটি।

বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ পড়েন। তা ছাড়া সংবাদ মাধ্যমেও শিরোনাম হয়। ঘুঘুরাইল গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ ইউনুচ আলী বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে অভিযোগ দিলে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দায়িত্ব দেওয়া হয়। জানাগেছে- ওই সময় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সরজমিন গেলে বিষয়টি আমলে নেন।

এক পর্যায়ে তিনি মৌখিক আদেশে নির্মাণ কাজ স্থগিত দেওয়ার নিদের্শ দিয়ে আসেন। তারপর থেকেই নতুন করে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। এদিকে- বাদী ইউনুচ আলী অভিযোগ করেছেন প্রশাসন সে সময় তাৎক্ষনিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসলেও রহস্যজনক কারণে তা থমকে যায়।

ইউনুচ আলী জানায়- প্রধান শিক্ষক আবদুল গফুর এ বছরই চাকুরী থেকে অবসরে যাচ্ছেন। তাকে এ ঘটনা থেকে রেহাই পেতে দীর্ঘদিন তদন্তের কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে। তবে এ অভিযোগ নাকচ করেছেন প্রধান শিক্ষক আবদুর গফুর। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান- বিদ্যালয়ের স্বার্থে না বুঝেই কাজটি করা হয়েছে। তবে এখন কর্তৃপক্ষ যেটাই সিদ্ধান্ত নিবেন সেটাই মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় কি !

বিদ্যালয়ের সভাপতি কামরুজ্জামান জানান- এতে কিছুই হয়না। খামাকা এলাকার কতিপয় দুই একটি খোচাখুচি করে আমাকে ক্ষতিগ্রস্থ করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে কামরুজ্জামান বলেন- নির্মাণ কাজে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। যে বিষয়টি নিয়ে দু:চিন্তা মাত্র।

বিদ্যালয়ের জমি বিক্রি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন- বিদ্যালয়ের নামে দলিলকৃত জমি বিদ্যালয়ের কোন ব্যক্তিরই বিক্রি করার ইখতিয়ার নেই। অভিযোগের প্রমান হলে অবশ্যই কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।