যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক হাসপাতালে ফিরলেন ৭ হাজার নার্স

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক আপাতত এক চুক্তিতে দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া সিটির দুটি প্রধান ও বৃহৎ হাসপাতালের ৭ হাজারেরও বেশি নার্স কাজে ফিরে গেলেন বৃহস্পতিবার।

এই দুটি হাসপাতাল হলো ম্যানহ্যাটানের মাউন্ট সাইনাই ও ব্রংক্সের মন্টিফিয়োর মেডিকেল সেন্টার। এই চুক্তিতে নার্সদের বেতন বাড়ানো এবং একজন নার্সকে কম সংখ্যক রোগী পরিচর্যার বিষয় দুটি ছিল প্রধান। অন্যান্য শর্তের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কাজের পরিবেশের উন্নয়ন। এই সাথে আরো কিছু দাবি নিয়ে নিউইয়র্ক সিটির ৬টি হাসপাতালের বিপুল সংখ্যক নার্স ধর্মঘটের হুমকি দেয়। ধর্মঘটের ডাক দেয়ার প্রাথমিক পর্যায়েই ম্যানহ্যাটানের কলাম্বিয়ান প্রেসবিটারিয়ান হসপিটাল নার্সদের দাবি মেনে নেয়ায় তারা ধর্মঘট থেকে সরে গিয়ে কাজে থাকেন। অন্য তিনটি হাসপাতালও দাবি মেনে নেয়। কিন্তু দুটি হাসপাতাল দাবি না মানায় এই দুটি হাসপাতালের প্রায় ৭,০০০ নার্স ধর্মঘটে যান।

গত সোমবার ভোর থেকেই মাউন্ট সাইনাই হসপিটাল এবং মন্টিফিয়োর মেডিকেল সেন্টারের বাইরে নিজ নিজ হাসপাতালের বিপুল সংখ্যক নার্স কাজে না গিয়ে হাসপাতালের সামনে প্লাকার্ড হাতে শ্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে দফায় দফায় নার্স নেতৃবৃন্দের বৈঠক হয়। নার্সদের দাবি নিয়ে দর কষাকষি করেন নিউইয়র্ক স্টেট নার্সেস এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। 

মঙ্গলবার যখন ধর্মঘট চলছিল দ্বিতীয় দিনে, তখন গভর্নর ক্যাথি হকুল নার্সদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তাদের দাবি বিবেচনা করার অনুরোধ জানান। একই রকম অনুরোধ জানান নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক এডামস। কিন্তু নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক এডভোকেট জুমানি উইলিয়ামস সশরীরে দুই হাসপাতালের সামনে ধর্মঘটরত নার্সদের পিকেট লাইনে যোগ দিয়ে তাদের দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন।

আগের সপ্তাহে আন্দোলনের প্রাক্কালে ধর্মঘট আহবানকারী হাসপাতালগুলো তাদের হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল রোগীদের অন্য হাসপাতালে ট্রান্সফার করে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের। হাসপাতালগুলো ইলেকটিভ সার্জারি স্থগিত করে। এম্বুলেন্সগুলোকে জরুরী রোগী নিয়ে ধর্মঘটী নার্সদের হাসপাতালে না যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

উল্লেখ্য নার্সদের বিভিন্ন দাবিদাওয়ার ভিত্তিতে ডাক দেয়া ধর্মঘটের প্রতি বিপুল সংখ্যক মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে সমর্থন জানান। ফলে পরপর তিনদিন অর্থাৎ সোম, মঙ্গল ও বুধবার একটানা ১২ ঘন্টা করে পিকেট লাইনে দাঁড়িয়ে শ্লোগান দেয়া শুরু হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়। নার্স ধর্মঘটের খবর দ্রত আমেরিকার ন্যাশনাল নিউজে পরিণত হয়।