যে কারণে স্বামীকে হত্যা
মোবাইল ফোনকে কেন্দ্র করে রিফাত শরীফকে হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করে একটি অনলাইন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বরগুনা জেলা পুলিশের এক সদস্য।
ওই পুলিশ সদস্য জানান, গত ২৬ জুন রিফাত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। ঘটনার দুদিন আগে সোমবার হেলাল নামে একজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় রিফাত শরীফ। হেলাল রিফাত শরীফের বন্ধু হলেও নয়ন বন্ডের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। সেই মোবাইল ফোন উদ্ধারের জন্য নয়ন বন্ড মিন্নির দারস্থ হয়। পরে রিফাত শরীফের কাছ থেকে ফোন উদ্ধার করে মিন্নি। কিন্তু ওই ফোন উদ্ধার করতে গিয়ে রিফাত শরীফের মারধরের শিকার হন মিন্নি। পরে হত্যাকাণ্ডের আগের দিন মঙ্গলবার নয়নের সঙ্গে দেখা করে মিন্নি সেই মোবাইল নয়নের হাতে তুলে দেন।
এ সময় মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফের হাতে যে মারধরের শিকার হয়েছেন তার প্রতিশোধ নিতে নয়নকে মারধর করতে বলেন। তবে মারধরের সময় নয়ন যাতে উপস্থিত না থাকেন, সেটাও মিন্নি নয়নকে বলেন। এরপর ওইদিন সন্ধ্যায় বরগুনা কলেজ মাঠে মিটিং করে রিফাত শরীফকে মারধরের প্রস্তুতি গ্রহণ নেয় বন্ড বাহিনী।
ওই পুলিশ সদস্য আরো জানান, রিফাত শরীফের ওপর হামলার আগ মুহূর্তে রিফাত শরীফের সঙ্গে মিন্নি কলেজ থেকে বের হলেও কলেজের সামনে রিফাতকে মারধরের পরিকল্পনা অনুযায়ী কোনো প্রস্তুতি দেখতে না পেয়ে সময়ক্ষেপণের জন্য রিফাত শরীফকে নিয়ে আবার কলেজে প্রবেশ করেন। এর কিছুক্ষণ পরই বন্ড বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য একত্রিত হয়ে রিফাত শরীফকে আটক করে মারধর করতে করতে কলেজের সামনের রাস্তা দিয়ে পূর্ব দিকে নিয়ে যায়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী রিফাতকে মারধর করা হচ্ছে দেখেই মিন্নি তখন স্বাভাবিকভাবে হাঁটছিলেন।
পরিকল্পনার বাইরে গিয়ে নয়ন বন্ড রিফাত শরীফকে মারধর শুরু করলে মিন্নি তখনই এগিয়ে আসে। মূলত মিন্নি রিফাত শরীফকে বাঁচাতে নয়, রিফাত শরীফকে মারধরের অভিযোগ থেকে নয়ন বন্ডকে বাঁচাতেই বারবার নয়ন বন্ডকে প্রতিহত করেন। কিন্তু সেই প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হন মিন্নি।
এদিকে স্বামী রিফাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি- জানিয়েছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন। তিনি জানান, রিমান্ড ও গ্রেফতারের আগে জিজ্ঞাসাবাদে মিন্নি নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বরগুনার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে বুধবার এ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
এদিকে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ৩ নম্বর আসামি রিশান ফরাজীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে সাংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন।তবে রিশানকে কোন জায়গা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের স্পষ্ট কোনো জবাব দেননি পুলিশ সুপার।
মামলার ৩ নম্বর আসামি রিশান ফরাজী এবং ২ নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী সম্পর্কে আপন ভাই।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন