রংপুরের পীরগাছায় ৭ বছরের শিশুর মরদেহ উদ্ধার

রংপুরের পীরগাছার পারুল ইউনিয়নে ৭ বছরের মেয়ে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার পারুল ইউনিয়নের চালুনিয়া বিল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পীরগাছা থানা পুলিশ। মরদেহটি চালুনিয়া গ্রামের আব্দুল হাকিমের কন্যা উম্মে হাবিবা (৭)।

শিশুটি পীরগাছার মিলিনিয়াম চাইল্ড স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলো।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায়, চালুনিয়া গ্রামের আব্দুল হাকিমের কন্যা উম্মে হাবিবা (৭) কাউকে না জানিয়ে শনিবার সকাল ৯ ঘটিকা থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পরই পরিবারের লোকজন শিশুটির সন্ধান শুরু করে। প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুর সন্ধান না পেয়ে মাইকিং এর মাধ্যমে ও থানায় জিডি করার মাধ্যমে শিশুটির সন্ধান করে পরিবার।

এদিকে সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭ টার দিকে প্রতিবেশী আব্দুল হান্নান দেখতে পায় চালুনিয়া বিলে একটি মৃতদেহ ভেসে আছে। মৃতদেহের নিকটে গিয়ে পরিচয় নিশ্চিত হয়েই চিৎকার শুরু করে আব্দুল হান্নান। তার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসে। খবর পেয়ে পীরগাছা থানা পুলিশ মরদেহটিকে উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্টের জন্য নিয়ে যায়।

প্রতিবেশীরা জানায়, ৩ মাস বয়সেই বাচ্চার মার সঙ্গে বাবার ডিভোর্স হয়। তারপর থেকে বাবার কাছেই লালন পালন শিশুটির। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন বাবা। কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রী সন্তান উম্মে হাবিবাকে মেনে নিতে না পারায় আবারো হয় বিবাহ বিচ্ছেদ। তৃতীয় স্ত্রীর ৩ মাস বয়সী একটি শিশু সন্তান রয়েছে।

সৎ মা ও বাবার ভালবাসার পাশাপাশি এলাকাবাসীও পরম যত্নে আগলে রেখেছিলো হাবিবাকে। হাবিবার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকাহত গ্রামবাসী।

ওই শিশুর পিতা আব্দুল হাকিম জানান, যে জায়গায় শিশুটির মরদেহ আজ ভেসে উঠেছে সেদিকে কখনো তার সন্তান খেলতে যায় না। তিনি আরো জানান, আমার সন্তান কখনো পায়ের সেন্ডেল খুলে কোথাও যায় নাহ। মরদেহের সঙ্গে সেন্ডেল ছিলো নাহ। আমার সন্তানের মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সুশান্ত কুমার সরকার জানান, শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার পরই পীরগাছা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। গতকালই আমরা এই বিলটিতে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়েছি।

আজকে সকালে আমরা মহিলা পুলিশের সহযোগিতায় মরদেহটি উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এলে এবিষয়ে জানা যাবে। এর পাশাপাশি আমরা নিয়মিত তদন্ত চালিয়ে যাবো। কোন অপরাধী যাতে পার না পায়। কোন নিরপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয় এটি আমরা নিশ্চিত করবো।