রবীন্দ্রনাথকে কি বিপাকে ফেলবেন প্রিায়ঙ্কা!

বলিউডের জনপ্রিয় প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার প্রোডাকশন হাউস পার্পল পেবলস পিকচার্স এমন এক বাংলা-মরাঠী দ্বিভাষিক ছবি বানাতে চলেছে, যার বিষয় রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রেম। আর কবির প্রথম প্রেমের কাহিনী ফাঁস করে তাকে সত্যি কি বিপাকে ফেলবেন প্রিায়ঙ্কা!

১৮৭৮ সালে ১৭ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ বোম্বাই যান তাঁর অগ্রজ সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বন্ধু আত্মারাম পাণ্ডুরাম তড়খড়ের বাড়িতে কয়েক মাস থাকার জন্য। উদ্দেশ্য, তরুণ কবিকে ইংরেজি আদবকায়দা শেখানো। আত্মারামের কন্যা অন্নপূর্ণা তড়খড় ওরফে আনার উপরেই দায়িত্ব বর্তায় কবিকে আদবকায়দায় দক্ষ করে তোলার।

কৃষ্ণ কৃপালনির ‘টেগোর: আ লাইফ’ গ্রন্থ থেকে জানা যায়, বয়সে ২-৩ বছরের বড় আনার সঙ্গে কবির এক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্ক অবশ্যই প্রেমের। কবি আনার নামকরণ করেন ‘নলিনী’। তাঁকে উদ্দেশ করে লিখতে থাকেন অসামান্য সব প্রেমের কবিতা।

আনাও সাড়া দেন কবির সেই তরঙ্গে। তিনি এমন কথাও বলেন যে, কবির গান তাঁকে মৃত্যুশয্যা থেকেও তুলে আনতে পারে। কবির নলিনী তাঁকে বারণ করেছিলেন দাড়ি রাখতে। কারণ তিনি কবির অনিন্দ্যসুন্দর মুখকে পুরোটা দেখতে চান। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ সেই বারণ শোনেননি, সে কথা বলাই বাহুল্য। ৮০ বছর বয়সে কবির মনে পড়েছিল আনা, তাঁর নলিনীর সেই নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু তখন নলিনী আর পৃথিবীতে নেই। ১৮৯১ সালে মাত্র ৩৩ বছর বয়সেই চলে গিয়েছিল কবির প্রথম প্রেম।

এই প্রেম কি বয়ঃসন্ধির কৌতূহল মাত্র? নাকি এই প্রেমই কবিকে সন্ধান দেয় চিরায়তের? এই সব প্রশ্ন রবীন্দ্র-গবেষকদের আজও ভাবায়। এই প্রেমোপাখ্যানকে ঘিরেই ছবি তৈরি করতে উদ্যত প্রিয়ঙ্কার প্রোডাকশন হাউস। কিন্তু এতে কি বাংলার প্রধানতম কালচারাল আইকনটির ভাবমূর্তিতে কালির ছিটে পড়বে না? এই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে বিশ্বভারতীকে।

এক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, যাতে এই ছবিতে কোনো আপত্তিজনক দৃশ্য না থাকে, তা তত্ত্বাবধানের জন্য বিশ্বভারতী একটি কমিটি গঠন করেছে। ‘নলিনী’ নামের এই সম্ভাব্য ছবিটিকে ৮ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি পাশ করালেই তবে নিশ্চিন্ত হবে বিশ্বভারতী।

কবি কোনও দিনই তাঁর প্রথম প্রেমকে গোপন করেননি। অকালপ্রয়াত নলিনী ছড়িয়ে রয়েছেন কবির প্রাথমিক পর্বের অসংখ্য কবিতায়, গানে। বৃদ্ধ কবিও ভোলেননি তাঁকে। ৮০ বছর বয়সেও গোপন করেননি তাঁর ও আনার সম্পর্ক।