রাজশাহীর সেই কারাগারটি পরিদর্শন করলেন রাষ্ট্রপতি

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। বুধবার বিকেলে তিনি কারাগারে যান। জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলে ১৯৭৭ সালের মে মাস থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রাজবন্দি হিসেবে কারাগারের ডিভিশন ওয়ার্ডে ছিলেন তৎকালীন এ আওয়ামী লীগ নেতা।

সংসদ সদস্য থেকে ডেপুটি স্পিকার, স্পিকারের পদ পেরিয়ে চার বছর আগে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বভার নেন তিনি।

বিকেলে রাষ্ট্রপতি কারাগারে পৌঁছালে কারারক্ষীদের একটি দল তাকে গার্ড অব অনার দেয়। কারাগারের ডিভিশন ওয়ার্ড (বর্তমান নাম মহানন্দা ওয়ার্ড) ঘুরে দেখেন। পাশাপাশি ‘২০ সেল’ ও ‘কনডেম সেল’ ঘুরে দেখেন রাষ্ট্রপতি। ‘২০ সেলে’ ভয়ঙ্কর কয়েদিদের রাখা হয় বলে কারা কর্মকর্তারা জানান। কনডেম সেলে রাখা হয় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতদের।

ডিভিশন ওয়ার্ডে সহবন্দি আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আব্দুল জলিল, সাবেক নেতা প্রয়াত সরদার আমজাদ হোসেনসহ অন্যদের নিয়ে স্মৃতির কথাও বলেন আবদুল হামিদ।

সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন। তিনি জানান, রাজশাহী কারাগারে ঢোকা ও বের হওয়ার সময় জেলের নিয়ম অনুযায়ী ‘এন্ট্রি বুকে’ সই করেন রাষ্ট্রপতি। পরে পরিদর্শন বইতেও সই করেন তিনি। ডিভিশন ওয়ার্ডের সামনে একটি বেল গাছের চারা রোপণ করেন তিনি।

ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে যোগ দেয়া আবদুল হামিদ পঁচাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৬-৭৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন জেলার কারাগারে বন্দি ছিলেন। পাকিস্তান আমলেও দুইবার কারাগারে যেতে হয়েছিল তাকে। দেশ স্বাধীনের পর সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসনামালে তাকে কারাগারে যেতে হয়। ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া, রাজশাহী ও ঢাকার কারাগারে থাকতে হয়েছে আবদুল হামিদকে।

কারাগার থেকে আবদুল হামিদ রাজশাহীর পদ্মা টি-বাঁধ পরিদর্শন করেন। পরে পদ্মা নদীতে কিছু সময় নৌভ্রমণ করেন।

এর আগে দুপুরে রাষ্ট্রপতি রাজশাহী সেনানিবাসে পৌঁছালে সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক তাকে স্বাগত জানান। সেনানিবাসে রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার দেয় প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের একটি দল।

রাজশাহী সফরের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার রাজশাহী সেনানিবাসে ১ প্যারাকমান্ডো ব্যাটালিয়নকে ‘ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা)’ প্রদান উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।