রিজার্ভ চুরি : উ. কোরিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করবে যুক্তরাষ্ট্র

হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮১ মিলিয়ন ডলার বা ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির ঘটনায় উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

২০১৪ সালে সনি স্টুডিওতে হামলা ও যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পেছনে উত্তর কোরিয়ার হাত ছিল বলে সম্প্রতি প্রমাণ পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এখন ক্তরাষ্ট্রের সরকারি আইনজীবীরা পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে মাললার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে গত শুক্রবার রয়টার্সের এক খবরে বলা হয়েছে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকার গ্রুপ ল্যাজারাস বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরি করে। এরআগে একই হ্যাকার গ্রুপ ভিয়েতনামের ব্যাংক, ২০১৪ সালে সনি স্টুডিওতে হামলা এবং ২০১৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিন্যান্সিয়াল সিকিউরিটি ইনস্টিটিউটে সাইবার হামলা চালায়। এছাড়া ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে হামলা চালায় ল্যাজারাসের হ্যাকাররা।

এদিকে, কিছুদিন আগে রাশিয়াভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কি দাবি করে, নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব থেকে ৮১ মিলিয়ন ডলার লুটের ঘটনায় উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা জড়িত, এমন প্রমাণ আছে তাদের হাতে।

ক্যাসপারস্কির প্রতিবেদনে বলা হয়, ল্যাজারাসের হ্যাকাররা শুরুতে উত্তর কোরিয়ার একটি আইপি অ্যাড্রেস থেকে ইউরোপের একটি সার্ভারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ তৈরি করে। ওই সার্ভার ল্যাজারাসের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

ক্যাসপারস্কির গবেষক ভিটালি কামলুক প্রতিবেদনে বলেন, উত্তর কোরিয়া ও ল্যাজারাসের মধ্যকার যোগাযোগের প্রমাণ পেয়েছেন তারা। ২০০৯ সাল থেকেই এই হ্যাকিং গ্রুপটি সক্রিয় বলেও প্রমাণ রয়েছে।

এর কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে, চীনা মধ্যসত্ত্বভোগীদের সহায়তায় উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিপুলপরিমাণ অর্থ চুরি করেছে। সে সময় এফবিআইর তদন্ত কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসে বলা হয়, হ্যাকাররা একই কোড ব্যবহার করে বাংলাদেশ ব্যাংক, ভিয়েতনামের ব্যাংক, ২০১৪ সালে সনিতে হামলা এবং ২০১৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় সাইবার হামলার ঘটনা ঘটায়।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে সংরক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়ে যায়। চুরি যাওয়া অর্থের কিছু পরিমাণ অর্থ ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের কয়েকটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে হ্যাকাররা। চুরি যাওয়া অর্থের মধ্যে ২ কোটি ডলার শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুরুতেই আটকে দেয় এবং পরে তা ফিরিয়ে দেয়। বাকি অর্থ এখনও ফেরত পায়নি বাংলাদেশ।