রোহিঙ্গাদের রক্ষার দাবিতে ইন্দোনেশিয়ায় বিক্ষোভ

সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের রক্ষায় ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় অবস্থিত মিয়ানমার দূতাবাসের বাইরে কয়েকশ’ নারী বিক্ষোভ করছেন। সংবাদসংস্থা এপি (Associated Press) জানায়, গত ৩ দিন ধরে চলা এই বিক্ষোভে সোমবার অংশগ্রহণকারীরা মিয়ানমারের এই ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের জন্য কঠোর শাস্তি আরোপের আহ্বান জানান।

বিক্ষোভের কারণে মিয়ানমার দূতাবাসের বাইরে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। গত সপ্তাহের শেষ দিকে দূতাবাস লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর প্রচুর সদস্য মোতায়েন করা হয়।
‘ফ্রেন্ডজ অফ মুসলিম রোহিঙ্গা’ নামের একটি সংগঠন এই বিক্ষোভের ডাক দেয়। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড আর ফেস্টুন নিয়ে রোহিঙ্গাদের উপর অমানবিক নির্যাতন বন্ধের দাবি জানায়। এসময় বিক্ষোভকারীরা ‘রোহিঙ্গাদের বাঁচাও’ বলে শ্লোগান দেয়।
মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিধন অভিযানে এপর্যন্ত কয়েকশ’ মানুষ নিহত হয়েছেন। জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে রাখাইনে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের সবগুলো গ্রাম।
স্যাটেলাইটের ছবি পরীক্ষা করে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম নিউজ ডটকম ডট ইইউ জানিয়েছে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের আর কোনো গ্রাম টিকে নেই! ওই অঞ্চলে থাকা রোহিঙ্গাদের সবগুলো আবাস জ্বালিয়ে দিয়েছে মিয়ানমার সরকার।
মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এই নিধন অভিযানকে ‘আনফিনিসড বিজনেস’ আখ্যা দিয়েছেন। অর্থাৎ প্রায় সময়েই রোহিঙ্গা নিধনের যে কর্মসূচী মিয়ানমার গ্রহণ করে থাকে, তিনি এবার তার সমাপ্তি টানছেন।
দাতব্য সংস্থা ফোরটিফাই রাইটস’এর বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনী ২ হাজার ৬শ’র বেশি গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলেছে। তাদের মতে, গত কয়েক দশকের মধ্যে বিশ্বের কোথাও মুসলিম জনগোষ্ঠীর উপর এমন নিধনযজ্ঞ চালানো হয়নি।
শুধু নিরাপত্তা বাহিনীই নয়, সংখ্যা গরিষ্ঠ বৌদ্ধরাও এই নিধনযজ্ঞে এগিয়ে এসেছে। তাদের হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুরা। সেখানে ঘটছে নারী ধর্ষণ ও নির্যাতনের মতো ঘটনাও।
প্রাণে বেঁচে পালিয়ে আসা অধিকাংশ রোহিঙ্গার ঠাঁই হয়েছে প্রতিবেশী বাংলাদেশে। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার হিসেবে, গত বছরের আগস্ট মাস থেকে মিয়ানমার সরকারের শুরু হওয়া রোহিঙ্গা নিধন অভিযানের কারণে এই পর্যন্ত প্রায় ৭৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন।