লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর ওয়াশ ব্লক নির্মাণে চরম অনিয়ম

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায়- ১ কোটি ৭ হাজার ২শ’ ২ টাকা ব্যয়ে ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।কাজ করছেন মেসার্স নূর ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে নির্মাণ কাজে নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করা, কখনো কখনো জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর অনুপস্থিতে নকশা মোতাবেক কাজে ফাঁকি দিয়ে বেইজ, পিলার ও ছাদ ঢালাই করা।নির্মান কাজে ছাকুনি ব্যবহার না করে অপরিস্কার বালু ব্যবহার করে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও কিউরিং করানো হয়নি বলে শিক্ষক ও স্থানীয়রা জানান।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ঠিকাদারের সাথে যোগসাজসে নিম্নমানের কাজ করে এবং তড়িঘড়ি করে নির্মান কাজ শেষ করার চেস্টা করছে। ঠিকাদারের বাড়ি কুড়িগ্রাম ও তিনি পেশায় একজন শিক্ষক বলে পরিচয় দিলেও ওই ঠিকাদারের নাম জানা নেই জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর।হাতীবান্ধা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কর্মচারী কদম আলীরও বাড়ি কুড়িগ্রামে। ওই কর্মচারীর যোগসাজসে ও প্রকৌশলী রাসেল মিয়ার সহযোগিতায় ঠিকাদার এ ধরনের নিম্নমানের কাজ করছেন।

যার ফলে ঠিকাদার কোনদিনও আসেনি। লেবারও মিস্ত্রি তাদের মনমতো কাজ করছেন।ফলে ঘরে বসে নিম্নমানের কাজ করতে কোন চিন্তা ও ঝামেলায় পড়তে হয়না ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে।এতে করে কোন রকম নয়ছয় কাজ শেষ করে বিলের অর্থ উত্তোলন করার জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলেও জানা গেছে। ভোলারডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে শিক্ষক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এমনেই তথ্য পাওয়া যায়।এছাড়াও হাতীবান্ধা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের মাঠ ব্যবহার করে ঠিকাদারের নির্মান সামগ্রী রাখা হয়েছে।

ফলে অফিসের বাউন্ডারি ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। অপরদিকে নোংরা ও ময়লায় পরিবেশ হারিয়েছে দপ্তরটির উপজেলা কার্যালয়।
ভোলারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহেদুল ইসলাম বলেন, ওয়াশ ব্লকের কাজে ঠিকাদার কোনদিনও আসেনি। মিস্ত্রি ও লেবার তাদের মনমতো কাজ করছে।

লেবার, মিস্ত্রী এমনকি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর নিকট ঠিকাদারের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর চেয়ে না পাওয়ায় ওই ঠিকাদারের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। ঠিকাদারের নামও জানেন না প্রকৌশলী রাসেল মিয়া। তাঁর কথাবার্তা, চাল চলনে মনে হলো, তিনি প্রকৌশলী নন, যেন, তিনিই ঠিকাদার।

ওয়াশ ব্লকের নির্মান কাজের অনিয়মের বিষয় জানতে গেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেজাজ হারিয়ে ফেলে বলেন, সাংবাদিকদের এসব ফালতু প্রশ্নের জবাব দিতে বাধ্য নই। কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আসেন তারপরে বক্তব্য দেব। এসব অনিয়মের বিষয়ে কতৃপক্ষের তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী স্থানীয়দের।