শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রকাশ

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার শিকার জাতির সূর্যসন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীর চতুর্থ তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার। ফলে এ নিয়ে দেশে শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৬০ জনে।

জাতীয় গণহত্যা দিবসের আগের দিন রোববার (২৪ মার্চ) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক।

চতুর্থ পর্যায়ে ১১৭ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আর আগের তিন পর্যায়ে প্রকাশ করা হয় ৪৪২ জনের তালিকা। এতে এখন পর্যন্ত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা হলো ৫৬০ জন।

মোজাম্মেল হক বলেন, ৫৬০ জনের তালিকাই শেষ নয়। আরো রিভিউ করার সুযোগ আছে।

আগামী শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস অর্থাৎ ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়ের জন্য ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর যাচাই–বাছাই কমিটি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। ১১ সদস্যের একটি কমিটিকে সহায়তা করতে আরো দুটি উপকমিটি করা হয়।

এরপর ওই কমিটির সহায়তায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী যাচাই–বাছাই করে এর আগে তিন পর্যায়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রকাশ করে।

প্রথমে ২০২১ সালের এপ্রিলে ১৯১ জন এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০২২ সালের ২৯ মে মাসে প্রকাশ করা হয় ১৪৩ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম। এরপর গত ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশ করা হয় আরো ১০৮ জনের নাম।

যাচাই-বাছাই কমিটি চার পর্বে মোট ১৭টি পেশার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর মধ্যে ১৪টি ক্যাটাগরি থেকে ৫৬০ জনের নাম প্রকাশ করা হয়।

শহীদের বুদ্ধিজীবীদের তালিকায় পেশার ভিত্তিতে রয়েছেন- এ তালিকায় শিক্ষক ১৯৮, চিকিৎসক ১১৩, আইনজীবী ৫১, প্রকৌশলী ৪০, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী ৩৭, সংস্কৃতিসেবী এবং চলচ্চিত্র, নাটক, সঙ্গীত, শিল্পকলার অন্যান্য শাখার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ৩০, সমাজসেবী ২৯, রাজনীতিক ২০, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক ১৮ জন করে, বিজ্ঞানী ৩ এবং দার্শনিক, গবেষক ও চিত্রশিল্পী ১ জন করে রয়েছেন।

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাইলেন বিদেশি বন্ধুরাগণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাইলেন বিদেশি বন্ধুরা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে গণহত্যার শুরু থেকে মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়জুড়েই বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বিজয়ের প্রাক্কালে এ হত্যাযজ্ঞ ভয়াবহ রূপ নেয়। এ কাজে তাদের সহযোগিতা করেছিল দেশীয় দোসররা।

দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালির বিজয় যখন আসন্ন, তখনই ভয়াবহ রূপ নেয় বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড। ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, শিল্পীসহ জাতির সূর্যসেন্তাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে নির্বিচারে হত্যা করে।