শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যত গড়ার অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর

আগামী শতকে বাংলাদেশ কেমন হবে, সেই কর্মপরিকল্পনা করে দিয়েছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশ গড়ে তুলতে শিশুদেরকে তার সরকার যোগ্য করে গড়ে তুলছে।

আজকের শিশুদের আগামী দিনের কর্ণধার আখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, শিশুদের উজ্জ্বল ও সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার কথা মাথায় রেখে সরকার তার সব কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বিকেলে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে ‘টুঙ্গিপাড়া: হৃদয়ে পিতৃভূমি’ শীর্ষক আয়োজনে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এই মর্যাদা ধরে রেখে আগামী দিনে আমরা বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলব। এটাই হচ্ছে আমাদের অঙ্গীকার।’

তিনি বলেন, ‘২১০০ সাল পর্যন্ত এই বাংলাদেশ কীভাবে উন্নত হবে সে পরিকল্পনা আমি প্রণয়ন করে, সেটা দিয়ে গেছি। কাজেই শিশুদের ভবিষ্যৎ যাতে উজ্জ্বল হয়, সুন্দর হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের সব কর্মপরিকল্পনা।’

শিশুদের উদ্দেশে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘ছাড়পত্র’ কবিতার কয়েকটি চরণ আবৃত্তি করে শোনান প্রধানমন্ত্রী।

‘যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’

শিশুরা সুরক্ষিত থাকবে, সুন্দর জীবন পাবে- এমন অঙ্গীকার জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সময় স্কুল বন্ধ ছিল। আল্লাহর রহমতে এখন সব স্কুল খুলে গেছে। কাজেই এখন স্কুলে পড়াশোনার সুযোগ আবার এসেছে। তারা পড়াশোনা করবে। সেটাই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন করোনা ছিল, তখন আমরা অনলাইনে ক্লাস নিয়েছি। শিশুরা যেন কোনোভাবে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করে দিচ্ছি। এখানে শিশুরা খেলাধুলা করতে পারবে, প্রতিযোগিতা করতে পারবে।’

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বাঙালি জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার প্রসঙ্গ উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে।

তিনি বলেন, ‘আমি জানি না কী অপরাধ ছিল তার? আমার বাবা দেশের মানুষকে ভালোবেসেছিলেন, এ দেশটিকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন, যেন দেশের মানুষ ভবিষ্যতে সুন্দর জীবন পায় এবং উন্নত জীবন পায়। সে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে তিনি তার জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন, বাংলার মানুষের জন্য।’

শিশুদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা শিশুদের খুবই ভালোবাসতেন। আমার ছেলে জয়ের সৌভাগ্য হয়েছে, আমার বাবার কোলে চড়ে খেলা করতে। তিনি যখন বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতেন, তখন মনে হতো তিনি নিজেই একটা শিশু। এটাই ছিল তার চরিত্রের সবচেয়ে বড় দিক, যেটা তার সরলতা।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত টুঙ্গিপাড়ায় ২১ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুজিববর্ষ লোকজ মেলা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘এই টুঙ্গিপাড়ার মাটিতে মুজিববর্ষ লোকজ মেলা করব। আমি আনন্দের সঙ্গে আপনাদের জানাচ্ছি যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শুভ জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে জাতির পিতার সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি আগামী ২১ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ মাঠে মুজিববর্ষ লোকজ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।’

এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশবিষয়ক বই, চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন থাকবে মেলায়।

সশরীরে মেলায় উপস্থিত থাকা সম্ভব হবে না বলে বৃহস্পতিবার মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সরাসরি উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করতে পারছি না, কিন্তু আমি আজকেই এই মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করছি।’