সংসদে আশরাফের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত

আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এই জানাজা হয়। এতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাধারী ব্যক্তিরা অংশ নেন।

জানাজা শেষে সৈয়দ আশরাফকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। এরপর প্রথমে রাষ্ট্রপতি, পরে প্রধানমন্ত্রী এবং স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

শ্রদ্ধা জানানো শেষে সৈয়দ আশরাফের মরদেহ নেয়া হবে কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহে। সেখানে জানাজার পর ঢাকার বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

গত ৩ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মানা যান।

এরপর গতকাল শনিবার রাতে তার মরদেহে ঢাকায় আনা হয়। বেইলি রোডের সরকারি বাসভবনে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরদেহ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) হিমঘরে রাখা হয়।। সেখান থেকে রোববার সকালে জানাজার জন্য মরদেহ সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনা হয়।

সৈয়দ আশরাফের চাচাতো ভাই সৈয়দ আশফাক টিটু জানান, দুপুর ১২টায় সৈয়দ আশরাফের নিজ জেলা কিশোরগঞ্জে নেয়া হবে মরদেহ। সেখানে শোলাকিয়া ঈদগাহে দ্বিতীয় জানাজা হবে।

এরপর হেলিকপ্টারে মরদেহ নেয়া হবে ময়মনসিংহে। সেখানকার আঞ্জুমান ঈদগাঁহে শেষ জানাজা হবে। আর বাদ আসর রাজধানীর বনানী কবরস্থানে সৈয়দ আশরাফের মরদেহ দাফন করা হবে বলে জানান তিনি।

গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ-১ থেকে নির্বাচিত হন। কিন্তু, অসুস্থতার কারণে ৩ জানুয়ারি তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে পারেননি। ওইদিন রাতেই তিনি সবাইকে ছেড়ে চলে যান না ফেরার দেশে।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্য তিন জাতীয় নেতার সঙ্গে আশরাফের বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছিল। বাবার মৃত্যুর পর সৈয়দ আশরাফ যুক্তরাজ্যে চলে যান।

দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্যে থাকা আশরাফ দেশে ফিরে ১৯৯৬ সালে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে পুনর্নির্বাচিত হন তিনি।

সেনা সমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের পর তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক হন। তবে ২০১৬ সালে দলের সম্মেলনে এই পদ ছেড়ে দেন তিনি।

২০০৯ সাল থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন সৈয়দ আশরাফ। ২০১৫ সালের ৯ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করেন। এক মাস এক সপ্তাহ দপ্তরবিহীন মন্ত্রী থাকার পর ১৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রী নিজের অধীনে রাখা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন তাকে।

ব্যক্তিগত জীবনে সৈয়দ আশরাফুল ব্রিটিশ-ভারতীয় শীলা ঠাকুরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। শীলা লন্ডনে শিক্ষকতা করতেন। ২০১৭ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সৈয়দ আশরাফ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন।