সংসদে সাতজনও বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে : কাদের

নির্বাচনে বিজয়ী ঐক্যফ্রন্টের সাতজনও বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বুধবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান কাদের।

ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত এমপিরা শপথ নেবেন কি নেবেন না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। তাদের শপথ নেয়ার বিষয়ে আপনার মতামত কি- এ বিষয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সেটা আগেও বলেছি। একই কথা আমি বলব, বিষয়টি তাদের পুনর্বিবেচনা করা উচিত। যারা ইলেকটেড হয়েছেন তাদের জনগণ নির্বাচিত করেছেন। কাজেই জনগণের রায়কে তারা সম্মান করবেন, এটিই আমরা আশা করি।’

‘গতবার তারা নির্বাচন বয়কট করেছিলেন। এবার তারা অংশ নিয়ে যারা ইলেকটেড হয়েছেন তারা শপথ নেবেন না, তাহলে এটা কী জনরায়কে অসম্মান করা হয় না। আমি মনে করি তাদের জনরায়কে মেনে নেয়া উচিত’ বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, ‘সাতজনও একটা বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে পার্লামেন্টে। সংখ্যা কম হলে কণ্ঠস্বর দুর্বল নাও হতে পারে।’

নতুন মন্ত্রিসভায় কারা আসছেন- জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘এ বিষয়টি আমার জন্য অ্যাম্বারাসিং, বিকস এটা অ্যাবসিলিউটলি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এখতিয়ার, এ এরিয়াতে কারো অনুপ্রবেশের সুযোগ নেই। এটা একেবারেই তার নিজস্ব সিদ্ধান্তের ব্যাপার। তিনি প্রয়োজন মনে করলে কারো সঙ্গে আলাপ করতে পারেন। সেটাও তার ব্যাপার। কাজেই মন্ত্রিসভার বিষয়ে এ জবাবটি আমি দিতে পারছি না।’

এবার মন্ত্রিসভা বড় হবে নাকি, আগের মতোই হবে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেটা আমি এ মুহূর্তে বলতে পারছি না। বাড়তেও পারে। প্রথমে একবারে বাড়বে সেটাও তো বলা যাচ্ছে না। কেবিনেটে তো প্রথম কিছু হওয়ার পর, পরে সম্প্রসারিত হয়। এখন প্রথম কীভাবে করবেন তা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনি সেটা করবেন।’

এটাও কি রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের সরকার হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘নট ইয়েট ডিসাইডেড। এসব বিষয়ে ফাইনালি কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। ১০ তারিখের মধ্যেই সব হয়ে যাবে, এটা আমি মোটামুটি জানি।’

বিরোধী দল কে হবে- এ বিষয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘অপজিশন কে হবে, সেটা তো…। অপজিশন তো আছেই। গতবার তো অপজিশন ছিল তারাও তো আছেন। সেটা ঐক্যমতের সরকার ছিল। এবার ঐক্যফ্রন্ট আছে, তারা শপথ নেবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন, এটা চূড়ান্ত কি-না সেটাও তো দেখার অপেক্ষা আছে। ৭ জনের মধ্যে গণফোরাম আছে, তাদের আবার ভিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত আছে কি-না, সেটাও দেখার বিষয়। কাজেই ২/৩ দিনের মধ্যে সব ক্লিয়ার হয়ে যাবে।’

‘পার্লামেন্টারি কমিটির মিটিং সম্ভবত কালকে (বৃহস্পতিবার) নাও হতে পারে। পরেও হতে পারে। মেজরিটি পার্টি লিডার অব দ্য হাউস হিসেবে শেখ হাসিনাকে যখন আমরা ইলেক্ট করব, তখন প্রেসিডেন্ট তাকে সরকার গঠনে শপথ নেয়ার জন্য আহ্বান করবেন। এটাই নিয়ম।’

বিপুল ভোটে বিজয়ী সরকারের চ্যালেঞ্জ কী হবে- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নির্বাচনী ওয়াদা পূরণ করা। ইশতেহারে যে প্রতিশ্রুতিগুলো আমাদের লিডার শেখ হাসিনা জাতির সামনে ঘোষণা করেছেন। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নই হল চ্যালেঞ্জ। বিশাল বিজয়ের সঙ্গে বিশাল দায়িত্বও জড়িয়ে আছে।’

ঐক্যফ্রন্ট আইনের আশ্রয় নেবে এবং আন্দোলনে যাবে- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘লিগ্যাল ব্যাটল আমরা ফেইস করব। আর আন্দোলনের আওয়াজ তো শুনে আসছি ১০ বছর ধরে। দেখি এবার যদি কোনো আন্দোলন তারা বাস্তবে করতে যান তবে তা আমরা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করব। নন-ভায়োলেন্ট মুভমেন্ট আমরা পলিটিক্যালি ফেস করব। ভায়োলেন্ট হলে সেটার জবাব দেয়ার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আছে।’

এ সময় ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ষন শ্রিংলা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি নতুন বছরের শুভেচ্ছা, একই সঙ্গে নির্বাচনে জয়লাভ করায় শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলাম। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সেটাও জানিয়েছি।’