সাংবাদিক প্রবীর সিকদার খালাস: দীর্ঘ যন্ত্রণার ‘দায়’ নির্ধারণসহ ‘ক্ষতিপূরণ’ প্রদান করতে হবে …আ স ম রব

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় খালাস পাওয়া লেখক ও দৈনিক বাংলা ৭১ এর সম্পাদক প্রবীর সিকদারের দীর্ঘ যন্ত্রণার ‘দায়’ নির্ধারণ ও ‘ক্ষতিপূরণে’র দাবিতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল -জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব গণমাধ্যমে নিম্নোক্ত বিবৃতি দিয়েছেন।

আ স ম আবদুর রব বলেন, “নিরাপরাধ সাংবাদিকসহ নাগরিকগণ মিথ্যা মামলা ও রিমান্ডের নামে নির্যাতনের শিকার হবেন, তাঁদের পেশাগত জীবন বিপন্ন ও ব্যক্তিজীবন ধ্বংস হয়ে যাবে তবুও সরকার কোন দায় বহন করবে না এটা রাষ্ট্রের কোন চরিত্র হতে পারে না, এটা সভ্যতার প্রতিনিধিত্ব করে না।”

খালাস পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রবীর সিকদার সাংবাদিকদের বলেছেন, “এই আইনি লড়াইয়ে জিতলেও পারিবারিক জীবনে বড় ক্ষতি হয়ে গেছে, আমি এই ছয়টি বছর লড়াই করেছি কিন্তু আমার পারিবারিক জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে উলটপালট হয়ে গেছে। আমি এই ছয়টি বছর বাড়ি থেকে জমি বিক্রি করে ঢাকায় থেকেছি। আমি কোথাও কাজ করতে পারিনি,কাজেও নেয়নি।”

আদালত বলেছেন, ‘মামলা করেছেন দূরের একজন, তার এ অভিযোগে মামলা করার এক্তিয়ার ই নেই।’

তাহলে এই বেআইনি কর্মকাণ্ডে অতি উৎসাহী হয়ে মামলা দায়ের এবং গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয়াসহ সরকারের অতি বাড়াবাড়ির দায় সরকারকেই বহন করতে হবে।

সুতরাং যাদের ভুলে, যাদের বাড়াবাড়িতে এবং যাদের অতি উৎসাহে প্রবীর সিকদারের জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে, তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। প্রবীর সিকদারের ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন এবং পেশাগত জীবনের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। নয়তো এই ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটতেই থাকবে। সরকার বিভিন্ন অজুহাতে সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষের উপর নিপীড়নের খড়গ চালাতে থাকবে এবং নাগরিকদের জীবনকে বিপন্ন করে তুলবে। এ ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে সরকার জনগণের অধিকার সুরক্ষার চেয়ে অধিকার হরণ করতেই অতিউৎসাহী। ইতোমধ্যে আইসিটি আইনের নামে ভুয়া মামলায় সাংবাদিকসহ অসংখ্য নাগরিকের জীবন দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে।

রাষ্ট্রকে অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়াতে হবে। এ লক্ষ্যে:

১। প্রজাতন্ত্রের একজন নিরপরাধ নাগরিকের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবন ধ্বংস করার দায়ে সরকারকে আন্তরিকভাবে ‘দুঃখ প্রকাশ’ করতে হবে।
২। সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে মামলাসহ দীর্ঘ যন্ত্রনা প্রদানের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ ও ক্ষতি পূরণ প্রদানের লক্ষ্যে নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী একটি কমিটি গঠন করতে হবে।
৩। নিবর্তনমূলক আইসিটি আইন প্রত্যাহার করতে হবে।

ভবিষ্যতে অনুরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ও রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ ‘গণমাধ্যম’কে সুরক্ষায় সাংবাদিক সমাজকে সুসংগঠিত ও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে।