সুচিকে ফোন করে ‘কড়া বার্তা’ দিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট

মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর হাতে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে দেশটির ক্ষমতাসীন দলের নোবেল বিজয়ী নেত্রী অং সান সুচিকে ফোন করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। এ সময় সুচিকে রোহিঙ্গাদের ওপর চলা অব্যাহত হত্যাযজ্ঞ নিয়ে মুসলিম বিশ্বের গভীর উদ্বেগের বার্তা পৌঁছে দেন তিনি। খবর: এএফপি ও রয়টার্সের। মঙ্গলবার এরদোগান সুচিকে ফোন করেন বলে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।

মিয়ানমারের নেত্রীকে এরদোগান বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলমান সংঘাতে মুসলিম বিশ্ব গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করতে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসগলুকে পাঠানো হয়েছে বলেও সুচিকে অবহিত করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।

সূত্র জানায়, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ সফরে যাবেন। এরপর তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

গত ২৪ আগস্ট মধ্যরাতের পর থেকে রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানে ৪ শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হয়েছেন। অভিযানের মুখে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্বের চাপে রয়েছে মিয়ানমার।

এরদোগান আগেই রাখাইনে রাষ্ট্রীয় মদদে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। টেলিফোনে এদিন তিনি একই কথা সুচিকেও স্মরণ করিয়ে দেন। বলেন, ‘রাখাইনে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং মুসলিম বিশ্ব এটি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

গত ২৪ আগস্ট মধ্যরাতের পর রাখাইনে অন্তত ২৫টি পুলিশ স্টেশন ও একটি সেনাক্যাম্পে রোহিঙ্গা যোদ্ধারা প্রবেশের চেষ্টা করলে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পরে আরাকান স্যালভেশন আর্মি বা আরসা আত্মরক্ষার্থে এই হামলা করার কথা স্বীকার করে।

সূত্র জানায়, ফোনে এরদোগান ও সুচি রাখাইনের সংঘাত বন্ধে সঠিক পন্থা এবং দুর্গত অঞ্চলে মানবিক ত্রাণ পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করেন।

তারা উভয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, বিশেষ করে সাধারণ নাগরিককে লক্ষ্যবস্তু করার কড়া নিন্দা জানান। একই সঙ্গে রাখাইনে যেন মানবিক দুর্যোগ নেমে না আসে সে বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান এরদোগান।

মুসলিমদের প্রতি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের টান নতুন কিছু নয়। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি নির্যাতিত মুসলিম রোহিঙ্গাদের পক্ষে মুসলিম বিশ্বকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন।

গত শুক্রবার ঈদুল আজহার নামাজ শেষে এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইনের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানো তুরস্কের নৈতিক দায়িত্ব।’